আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর ১০ টি চমৎকারী উপায়
দাঁত ব্যথা হলে করণীয়আপনি যদি আক্কেল দাঁতের ব্যথার ভুক্তভোগী হন তাহলে "আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়"সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধটি আপনার জন্য। আমাদের মাঝে এমন খুব কম মানুষই রয়েছে যারা আক্কেল দাঁতের যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা অনুভব করেননি। আর শুধুমাত্র এই ব্যথা অনুভবকারী একজন ভুক্তভোগী জানেন এটি কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে।
আজকের প্রবন্ধে আমরা মূলত আক্কেল দাঁত কেন হয়, আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়, এটি তুলতে কত টাকা খরচ হয় এবং আক্কেল দাঁত তোলার পর করণীয় সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তুর উপরে আলোকপাত করার চেষ্টা করব
আক্কেল দাঁত কেন হয়
সর্বপ্রথম বলাবাহুল্য যে প্রচলিত কথা মোতাবেক আক্কেল দাঁতের সঙ্গে আক্কেল কিংবা জ্ঞান বুদ্ধির কোনো রকম সম্পর্ক বিদ্যমান নয়। মূলত আমাদের মুখের চোয়ালের সবচেয়ে পেছনে উপর ও নিচ উভয়দিকে একটি করে মোট চারটি দাঁত উঠে এবং এই দাতগুলোকে আক্কেল দাঁত বলা হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয়ে থাকে 'Wisdom tooth' কিংবা থার্ড মোলার আমাদের মুখের ভিতরে মোট চারটি অংশ রয়েছে। মুখের উপরের অংশ, নিচের অংশ, এবং ডান ও বাম দিকের অংশ। এক একটি অংশের দাঁত সংখ্যা মোট ৮টি। তার মানে চারটি অংশে মোট দাঁত ৩২ টি।
প্রতিটি অংশের একবারে শেষে ৮ নম্বর দাঁতটিকে বলা হয় আক্কেল দাঁত। আমাদের মুখের ভিতরে মোট ৪টি আক্কেল দাঁত রয়েছে। আক্কেল দাঁতকে তৃতীয় মোলার দাঁতও বলা হয়ে থাকে। ৩২ টি দাঁতের মধ্যে এই দাঁতগুলোই সব থেকে বড় হয়।আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষের কথা চিন্তা করি কিংবা আদিম যুগের মানুষের কথা পর্যালোচনা করে দেখি তাহলে বুঝতে পারবো আক্কেল দাঁত ঠিক কেন হয় এবং এটি কেন তখন এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
আরও পড়ুনঃ বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
যেমনটা আমরা সকলেই জানি আদিম যুগে মানুষ ছিল গুহাবাসী এবং তারা আগুন জ্বলাতে শিখেনি। মাংস খেত রান্না ছাড়াই কাঁচা অবস্থায়, কি করার বাঁচতে তো হবে! যার ফলে খাবার অনেক বেশি চিবাতে হতো আর এই খাবার চিবানোর জন্য জন্য প্রয়োজন ছিল শক্ত চোয়াল এবং শক্ত দাঁত। যেহেতু আমাদের দিকে তাদের চোয়াল অনেক প্রশস্ত ছিল সেক্ষেত্রে আক্কেল দাঁত উঠলে কোনরকম সমস্যা হতো না কিংবা তারা বুঝতে পারত না।
আবার তুলনামূলক অনেক শক্ত পরিমানে খাবার খাওয়ার ফলে তাদের দাঁত দ্রুত পড়ে যেত যার ফলে মাড়ির শেষ প্রান্তে ফাঁকা থাকতো অনেকখানি। আর সেই স্থানে আক্কেল দাঁত উঠলে কোনরকম সমস্যাই হতো না। এখন আমরা যদি বর্তমান সময়ের কথা বিবেচনা করি তাহলে দেখা যাবে খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই বদলে গেছে এবং খাবার হয় রান্না করা ও নরম সেদ্ধ।
এর পাশাপাশি আমাদের চোয়ালের হাড়গুলো আগের তুলনায় অনেক ছোট হয়ে গেছে। এই কারণবশত পাটিতে ৩২ টি দাঁতের ঠিকভাবে জায়গা হয় না এবং আক্কেল দাঁত উঠানো পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা পায় না। কিন্তু সমস্যা হল বয়স বাড়ার সাথে সাথে আক্কেল দাঁত ঠিকই ঠেলে উপরে আসতে চায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা না পাওয়ার ফলে বাঁকা ভাবে হলেও এই জেদি দাঁতগুলো ঠিকই উঠে যায় আর চোয়ালে যথেষ্ট জায়গা না থাকার ফলে অনুভূত হয় প্রচন্ড রকমের ব্যথা এবং এর সাথে সাথে ফুলে ওঠে মাড়িও।
আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
দাঁতের ব্যথা সব সময়ই বেদনাদায়ক এবং কষ্টকর। তবে এই ব্যথাটা যদি আক্কেল দাঁতের হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রণায় ভুগতে হয় এবং ব্যথা ও মাত্রাতিরিক্ত হয়। প্রয়োজনে আক্কেল দাঁতের বিপরীতে ছোট অস্ত্র পাচার পর্যন্ত করতে হতে পারে যার জন্য পরবর্তী সময়ে অসহ্য যন্ত্রণায় জ্বর আসা, গলা ও কানে ব্যাথা শুরু হওয়া এমন কি খাবার খেতে অসুবিধা হওয়ার মত সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই ধরনের ব্যথা কমানোর জন্য অনেকে বেদনা নাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন এর পাশাপাশি ব্যথা মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়। কিন্তু কিছু কৌশল কিংবা ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে আপনি চাইলে আক্কেল দাঁতের ব্যথা হতে নিরাময় লাভ করতে পারেন। তরুণ সে কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।
আরও পড়ুনঃ তীব্র মাথা ব্যথা কমানোর উপায়
- পুদিনা রসঃ ব্যথা এবং প্রদাহ কমানোর ক্ষেত্রে সবথেকে কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর ভিতরে পুদিনা অন্যতম। পুদিনা পাতার রস আপনাকে আক্কেল দাঁতের ব্যথা হতে মুক্তি দিতে পারে।
- লবঙ্গঃ আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে লবঙ্গ অনেক শক্তিশালী। লবঙ্গতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার মাধ্যমে প্রদাহ কমাতে সহযোগিতা করে। লবঙ্গ ব্যথা দাঁতের উপর রেখে দিন চিবানোর দরকার নেই। ব্যথা না কমা পর্যন্ত মুখেই রাখুন।
- রসুনঃ আমাদের সকলেরই রান্না ঘরে থাকা রসুন বহু গুণে ভরপুর এটি উপাদান এবং দাঁতের ব্যথা কমাতে এর কোন জুড়ি নেই। রসুনের কোয়া আক্রান্ত দাঁতে চেপে ধরে রাখুন খুব অল্পসময়েই আপনি এর ফলাফল বুঝতে পারবেন।
- পেঁয়াজঃ পিয়াজে মূলত অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান বিদ্যমান রয়েছে । এই উপাদানগুলো প্রদাহ বিরোধী এবং জীবাণুনাশক। পেঁয়াজের কোয়া আক্রান্ত দাঁতে দিয়ে রাখুন নিয়মিত ২ থেকে ৩ বার এইভাবে ব্যবহার করলে আক্কেল দাঁতের ব্যথা অনেকখানি কমে যাবে।
- হলুদ জলঃ দাঁতের যেকোনো ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে হলুদের কোন জুড়ি নেই। এক কাপ গরম জলে অর্ধেক চা চামচ হলুদের গুঁড়ো দুটি লবঙ্গ এবং এর সাথে দুটি শুকনো পেয়ারা পাতা নিন। কুল কুলা করুন দেখবেন আক্কেল দাঁতের ব্যথা সহ মাড়ির কোনরকম ক্ষয় থাকলে আরাম পাবেন।
- লবণ জলঃ লবন জলের মিশ্রণ এর কুল কুলা করা সনাতন এবং প্রসিদ্ধ একটি পদ্ধতি। দাঁত কিংবা মাড়ির যেকোনো ব্যথা, ঠান্ডা লাগা জনিত ব্যথা ইত্যাদি সারাতে এই উপাদান অত্যন্ত কার্যকর। লবণ জল দিয়ে কুল কুলা করার ফলে দাঁতের গোড়ায় থাকা ব্যাকটেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত হ্রাস পায়। এর ফলে যেখানে আক্কেল দাঁত ওঠে সেই জায়গায় কোন ধরনের সংক্রমণ থাকলে তা নিরাময় হয়।
- ঠান্ডা-গরম সেঁকঃ এই পদ্ধতি ব্যবহার ব্যথা উপশম করতে যথেষ্ট সহযোগিতা করবে আপনাকে। প্রথমত একটি তোয়ালেতে বরফ নিয়ে ঠান্ডা সেঁক দিন এবং এর পরবর্তী সময়ে গরম সেঁক দিন। একে ঠান্ডা সেঁক দিলে যেমন ব্যথা কমবে পাশাপাশি গরম সেঁক দিলে রক্ত চলাচল বাড়বে যার ফলে আক্কেল দাঁতের ব্যথা উপশম হবে দ্রুত।অ্যালোভেরাঃ মাড়ির যে স্থানে আক্কেল দাঁত উঠেছে সেই জায়গাতে যদি অ্যালোভেরা জেল লাগানো যায় সে ক্ষেত্রে প্রশান্তি অনুভূত হবে এবং ব্যথার উপশম ঘটবে এর পাশাপাশি মাড়ির লাল ভাব দূর হবে।
- আদা কুচিঃ আক্কেল দাঁতের ব্যথার জন্য দায়ী প্যাথোজেনের সঙ্গে লড়াই করে প্রদাহমুক্ত করতে আদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- দাঁত তুলে নেওয়াঃ ব্যথা যদি একদম মারাত্মক বেড়ে যায় এবং অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মতাবেক দাঁতটি তুলে নেওয়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। তাছাড়া এর স্থায়ী সমাধান বের করা সম্ভব নয়। সময়মতো এর একটি ব্যবস্থা না করলে অচিরেই অন্যান্য দাঁতগুলিও সমস্যার ফাঁদে পড়তে পারে।
আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ - আক্কেল দাঁত উঠলে কি হয়
আক্কেল দাঁত উঠার তিক্ত অভিজ্ঞতা একমাত্র ভুক্তভোগী অনুভব করতে পারে। সাধারণত মুখের একদম শেষ মাথায় উপরে ও নিচে দুই পাশের মোট চারটি দাঁতকে বলা হয় আক্কেল দাঁত। আক্কেল দাঁত উঠার বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত যেকোনো সময় হতে পারে। যখন মুখে ৩২ টি দাঁত ধরার জায়গা থাকে না সে ক্ষেত্রে আক্কেল দাঁত উঠার সময় মারাত্মক ব্যথা অনুভূত হয়। যেহেতু দাঁত বেরিয়ে আসার জায়গা পায়না সেহেতু এর ফলে প্রচণ্ড রকমের ব্যথা সহ্য করতে হয়। মূলত আক্কেল দাঁত উঠার সময় যে উপসর্গগুলো দেখা দেয় তা হলোঃ
- দাঁত উঠার সাথে সাথে প্রচন্ড রকমের ব্যথা অনুভূত হওয়া এবং সেই স্থানের মাড়ি ফুলে যাওয়া।
- মুখের ভেতর সহ গালি ও গলার দিক ফুলে ওঠা। যদিও এই বিষয়ে আমাদের ধারণা কম সেও তো আমরা ভেবে বসি এটি টনসিলের ব্যথা কিংবা মামস এর ব্যথা।
- এই সময় মুখ খোলতেও অসুবিধা হয় এবং ব্যথা অনুভূত হয়।
- আক্রান্ত স্থানে চারপাশে ফুলে যায় ও তীব্র যন্ত্রণা হয়।
- কান ও মাথায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়।
- মুখে দুর্গন্ধ এবং অস্বস্তিকর কিংবা অপ্রীতিকর স্বাদ অনুভূত হয়।
- এর পাশাপাশি গলায় লিম্ফ নোড ফুলে যেতেও দেখা দেয়।
- পরিস্থিতি গুরুতর হলে ব্যথার কারণে শরীরের জ্বর আসে।
আক্কেল দাঁতের ব্যথা কত দিন থাকে
সাধারণত দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে আক্কেল দাঁতের ব্যথা নিরাময় হয়ে যায়। আক্কেল দাঁত তুলে ফেললে সেই ব্যথা নিরময় হতে কত সময় লাগবে তা পুরোপুরি নির্ভর করে আপনার কত বড় সার্জারি হচ্ছে তার ওপর এবং এর পাশাপাশি আপনি ডাক্তারের কথা কতটুকু মেনে চলছেন এবং নিজের যত্ন নিচ্ছেন তার উপর। তবে মোটামুটি ভাবে সব ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ সাতদিন থেকে সর্বনিম্ন দুই থেকে তিন দিন থেকে আপনি ঠিকঠাক মতো খাবার খেতে পারবেন। তবে মাথায় রাখতে হবে শিরশিরানি ভাব থেকে যেতে পারে যা পুরোপুরি ভাবে উপশম হতে ১৫ দিন থেকে ১ মাসের মত সময় লাগতে পারে।
আক্কেল দাঁত তোলার খরচ কত
আক্কেল দাঁত তোলার খরচটি মূলত নির্ভর করে আপনি ঠিক কোন ডাক্তার এর শরণাপন্ন হয়েছেন এটি তুলে ফেলার জন্য। ডেন্টিস অনুযায়ী এর তফাৎ লক্ষ্য করা যায়। একজন বিসিএস ডাক্তার মূলত ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা নেয় আক্কেল দাঁত তুলে ফেলার জন্য। অপরদিকে একজন ডিগ্রী ছাড়া ডাক্তার ১০০ থেকে ২০০ টাকার ভিতরে এই কাজ করে ফেলে। তবে আপনাকে অবশ্যই একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে ডাক্তার বাছায় এর ক্ষেত্রে আসলেই সে এই কাজে অভিজ্ঞ কিনা।
আক্কেল দাঁত তুললে কি সমস্যা হয়?
দাঁতের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কিংবা ডেন্টিসদের মতে আক্কেল দাঁত তুলে ফেলাই ভালো। যখন আমাদের অনুভূত হয় যে আক্কেল দাঁত উঠছে কিন্তু এতে কোন ধরনের ব্যথা কিংবা যন্ত্রণা অনুভূত হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে আমাদের মনে একটি প্রশ্ন ঘুরতে থাকে আদেও এই দাঁত তোলার প্রয়োজন কি আছে? আর এই প্রশ্নের উত্তরে আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে সমস্যা না থাকলেও আক্কেল দাঁতের তুলে ফেলাই মুখসহ দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক হবে।
আক্কেল দাঁত মুখের অন্যান্য দাঁতগুলোর ক্ষতি করে থাকে। এমনকি অনেক সময় দেখা যায় আক্কেল দাঁত ভেঙে মাড়ির মধ্যে আটকে গেছে যা অনেক যন্ত্রণাদায়ক হয়। ডেন্টিস্টরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন অল্প বয়সেই তুলে ফেলার কারণ বয়স যত বাড়বে ততই মুখের ভিতরে হাড় শক্ত হতে থাকবে এবং তখন এই দাঁত তুলে ফেলা হবে ভুক্তভোগীর জন্য যন্ত্রণাদায়ক এবং অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এ ধরনের দাঁত থেকে সাইনাসের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
যেহেতু মুখের ওইটুকু অংশ আক্কেল দাঁতের কারণে ব্রাশ করার সময় ঠিকমতো পরিষ্কার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না সে ক্ষেত্রে সেখানে জায়গা করে নাই ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু এবং সৃষ্টি হয় দাঁত ক্ষয় হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা। সুতরাং সময় মত আক্কেল দাঁত তুলে ফেলাই আক্কেলের হবে পরিচয়।
তবে দাঁত তুলে ফেলার পরেই অনেকের মুখ কিংবা মাড়ি খুলে যায় এবং ব্যথা অনুভূত হয়। যদিও সেটা দীর্ঘস্থায়ী নয়। কিন্তু ব্যথা যদি থেকেই যাই কিংবা ফিরে আসে সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিসেপটিক মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করলেই সমস্যা দূর হয়ে যায়।
আক্কেল দাঁত তোলার পর করণীয়
আক্কেল দাঁত তুলে ফেলার পরবর্তী সময়ে অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত এবং সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। চলুন সে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক।
- দাঁত তোলার ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অবশ্যই তুলা কামড় দিয়ে থাকতে হবে এবং বারবার সে তুলা বদলানো যাবে না।
- দাঁত তোলার সময় যেহেতু অবশ করে নেয়া হয় সেই ক্ষেত্রে অবশ ভাবটা না কেটে যাওয়া পর্যন্ত কোন কিছুই খাওয়া যাবেনা।
- ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত বিশ্রামে থাকা আবশ্যক সেক্ষেত্রে টানা যে শুয়ে থাকতে হবে তার কোন মানে নয় স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করুন।
- সার্জারি দেওয়ার পর যেহেতু সেলাই দেয়া হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই রোগীদের পরামর্শ দেওয়া হয় শক্ত কিছু না খাওয়ার। নরম এবং ঠান্ডা খাবার খেতে হবে শক্ত কিংবা গরম খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে। যেমন জাউ ভাত, আলু ভর্তা ইত্যাদি।
- ওষুধের সাথে বড় হয়ে ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন মাড়িতে।
- গরম পানীয় এবং ফলের রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- অবশ্য এড়িয়ে চলতে হবে ধূমপান এবং অ্যালকোহল।
- চেষ্টা করবেন মাথা উঁচু করে ঘুমানোর।
- দাঁত তোলার দিনে কোন মতে ই জোরে জোরে কুলি করা যাবে না।
- দাঁত তোলার পরের দিন হালকা কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে সকাল ও রাতে কুলকুলা করতে হবে আনুমানিক ৩ দিন পর্যন্ত।
- ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত বিন্দু বিন্দু রক্ত বেরোতে পারে সে ক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কিছু নেই কিন্তু তা লম্বা সময় ধরে চললে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- ডাক্তারের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে।
আমাদের শেষ কথা
সর্বোপরি,সুন্দর হাসির জন্য থাকা চাই সুন্দর, সুস্থ্য ও সবল এবং রোগমুক্ত দাঁত। আর দাঁতকে রোগমুক্ত রাখতে হলে অবশ্যই নিয়মিত মাড়ি ও দাঁতের যত্ম নিতে হবে। আক্কেল দাঁত নিয়েও আমাদের জল্পনা কল্পনার কমতি থাকে না। অনেক সময় এই দাঁত উঠলে যন্ত্রণাদায়ক এবং অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তাই কোন সময় আক্কেল দাঁত দেখা দিলে ডেন্টিস এর পরামর্শ অনুযায়ী তা তুলে ফেলাই ভালো।
আমরা আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর যে সকল উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি তা একদমই ঘরোয়া এবং প্রাথমিক পর্যায়ে। আক্কেল দাঁত জনিত সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজের যত্ন নিতে হবে। তাহলে সুস্থ থাকবে আপনার দাঁত এবং আরো সুন্দর হবে আপনার হাসি ও দৈনিন্দন জীবন।
ইজি গ্রাব ওয়েব এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url