খাওয়ার রুচি বৃদ্ধির ১০ টি কার্যকরী উপায়
খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতাখাওয়ার রুচি বৃদ্ধির কার্যকরী উপায় সমূহ আজকে আমাদের নিবন্ধের আলোচ্য বিষয়। খাদ্য ও মানুষ একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। খাদ্য গ্রহণ ছাড়া আমাদের বাঁচা অসম্ভব। সুতরাং কারো যদি খাদ্য গ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যা দেখা যায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই তা কোন অবহেলার বিষয় নয়।
আজকে আমরা খাওয়ার অরুচি সংক্রান্ত সমস্যার কার্যকরী সমাধান নিয়ে কথা বলব এবং এর পাশাপাশি মুখে রুচি না থাকার কারণ এবং কোন কোন খাবারে মুখে রুচি বাড়বে এই সংক্রান্ত বিষয় ও তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে আসবে।
ভূমিকা
আমরা অনেকেই কম ক্ষুধা লাগা কিংবা খাওয়ার রুচি কম হওয়া জনিত সমস্যায় ভুগে থাকি। মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা সহ বিভিন্ন ধরনের কারণে মানুষের ক্ষুধা কমে যেতে পারে কিংবা রুচিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে যদি বেশ কয়েকদিন ধরে এই সমস্যা অব্যাহত থাকে তাহলে এক্ষেত্রে শরীরের ওজন অনেকখানি হ্রাস পাবে এবং এর কারণে একজন মানুষ অপুষ্টিতেও ভুগতে পারে। অরুচি জনিত রোগটি সাধারণত অন্য কোন রোগের কারণে হয়ে থাকে। মানসিক অশান্তি সহ নানান ধরনের চাপ গ্যাস্ট্রিক,আলসার ইত্যাদির রোগের কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুনঃ হানি নাটস কি?হানি নাটস এর উপকারিতা
আবার অনেক সময় বয়স্কদের এ ধরনের রোগ দেখা দিয়ে থাকে। ক্ষুধা কম লাগা কিংবা খাবারের প্রতি অরুচি থাকার ফলে মানুষ যেমন পুষ্টিহীনতায় ভুগে থাকে ঠিক তেমন শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন রকমের রোগ যা শরীরকে আরো বিপর্যস্ত করে তোলে। কিন্তু কিছু উপায় অবলম্বন এর ফলে এই ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। ভেষজ উপাদান সেবন, খাদ্যাভাসে রোগ বালাই দূর করার মতো প্রভাবিত পুষ্টিকর খাবার যুক্ত করা এবং আরো কিছু কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে খাবার রুচি বৃদ্ধি করা সম্ভব।
মুখে রুচি না থাকার কারণ কি
বিভিন্ন ধরনের কারণে খাবারের প্রতি অরুচি কিংবা মুখে অরুচি হতে পারে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ গুলো হলো-
- গ্যাস্ট্রিক কিংবা আলসারের সমস্যা
- কোষ্ঠকাঠিন্য লিভার ও কিডনি জনিত সমস্যা
- অসুস্থতা কিংবা নানা ধরনের সংক্রমণজনিত কারণ
- মানুষিক চাপ কিংবা মানসিক অসুস্থতা
- অবসাদগ্রস্ত হওয়া অথবা মাত্রাতিরিক্ত বিষন্নতা
- অনেক সময় যারা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবেও অরুচি জনিত সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
- ইনফেকশনের কারণে অনেক সময় খাবার রুচি কমে যায়। এর সংক্রমণ যদি মুখে হয় সেক্ষেত্রে খাবারের স্বাদ পাওয়া যায় না যার ফলে সৃষ্টি হয় অরুচি জনিত সমস্যা।
- তলপেটের ব্যথা খাবারের প্রতি অরুচি অন্যতম কারণ।
- ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির খাবারের রুচি একদমই কমে যায়। যার ফলে এরকম কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক।
- অ্যালঝইমার নামক রোগে আক্রান্ত হলে খাবারের প্রতি অরুচি সৃষ্টি হয় এবং খাওয়ার খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়।
- হার্ট অ্যাটাক এর কারণে ও খাবারের প্রতি অরুচি জনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
- আমাদের ভিতরে কারো বাসায় যদি এমন কোন ব্যক্তি থাকেন যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি তাহলে অবশ্যই তাদের দৈনন্দন খাবারের প্রতি আপনার নজরদারি রাখা উচিত। তাদের যদি খাবারের প্রতি অরুচি কিংবা খিদে কমে যায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
খাওয়ার রুচি বৃদ্ধির উপায়
খাওয়ার রুচির জনিত সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আপনি অবশ্যই আশানুরূপ ফল পেতে পারেন। চলুন আলোচনা করা যাক খাবার রুচি বাড়ানোর কার্যকরী ১০টি উপায় সম্পর্কেঃ
- সহজপাচ্য খাবারঃ জাউ ভাত, সিদ্ধ ভাত, সাবু দানার তৈরি খাবার উত্তম কার্বোহাইড্রেটের উৎস। যা আপনার মুখে রুচি বৃদ্ধিতে অনেকখানি সহায়ক হবে।
- কম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াঃ উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার সমূহ মানব দেহের হজম শক্তিকে ধীর করে দিতে পারে যার ফলে এই খাবারগুলো আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য তৃপ্তিবোধ সম্পন্ন রাখতে পারে। ফলে খুদা কম লাগে। তাই কম আঁশ যুক্ত খাবার খাওয়া খাওয়ার রুচি বাড়াতে অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
- কিছু ভেষজ ও খনিজঃ কিছু ভেষজ মসলা বা ফল খাবারের স্বাদকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে এবং এর পাশাপাশি এই ভেষজ কিংবা মসলা দ্বারা তৈরি খাদ্যগুলো হজমে সহায়তা করে এবং ক্ষুধা বাড়াতেও সহায়তা করে। আপনি চাইলেই খেতে পারেন হরিতকি, পুদিনা কালো মরিচ, ধনে, আদা দারুচিনি, আমলকি, ইত্যাদি। তবে এই ক্ষেত্রে আপনাকে গ্যাসের সমস্যা থাকার কথাটি কেউ মাথায় রাখতে হবে।
- খাবার পরিবেশনঃ খাবারের স্বাদ, রং, গন্ধ, মানুষের রুচিকে অনেকাংশে প্রভাবিত করতে পারে তাই খাবার যত আকর্ষণীয় ভাবে পরিবেশন করবেন একজন মানুষের সেই খাবার এর প্রতি রুচি বেশি বৃদ্ধি পাবে।
- ফাস্টফুড এড়িয়ে চলাঃ ফাস্টফুড, কমল পানীয়, বেকিং ফুড, চিপস জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এগুলো রুচি কমিয়ে দেয় ও অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে যার ফলে খিদে আরোও কমে যায়।
- হালকা ব্যায়ামঃ হালকা ব্যায়াম করা কিংবা শরীর চর্চা করা এক্ষেত্রে উপকারী প্রমাণিত হতে পারে এর ফলে যেমন খিদা বাড়বে ঠিক তেমনি ভাবে বিপাকক্রিয়া বাড়বে। শরীরচর্চা করা কিংবা একটু হাঁটা আপনার শরীরকে ক্লান্ত করবে যার ফলে শরীরে খাদ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে এবং রুচিও বাড়বে।
- দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণের প্রভাবঃ শরীরের দীর্ঘমেয়াদি কোন ধরনের সংক্রমণ থাকলে খাবারের রুচির উপর এর প্রভাব পড়ে। এর উল্লেখযোগ্য প্রমাণ হলো যক্ষ্মা। এক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
- ওষুধের তালিকাঃ অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণে ভিন্ন ভিন্ন ওষুধ সেবন করে থাকেন। এক্ষেত্রে অনেক ওষুধের ফলেই খাবারের প্রতি অরুচির বিষয়টি ফুটে ওঠে সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ওষুধের তালিকা নিয়ে একজন বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলতে হবে।
- রুচি বাড়ানোর ওষুধঃ চিকিৎসক যদি কোন ধরনের রুচি বাড়ানোর ওষুধ দিয়ে থাকে তাহলে তো অবশ্যই খাওয়ার ৩০ মিনিট কিংবা ১ ঘন্টা আগে খাবেন এর পাশাপাশি ভিটামিন বি ১২ ট্যাবলেট ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানঃ সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা শুধু খাবার রুচি ঠিক করার জন্য নয় বরং শরীরের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য অনেক বেশি জরুরী। আপনাকে অবশ্যই দৈনিক ছয় থেকে সাত গ্লাস পানি পান করতেই হবে। তবে খাবারের আগে এবং পরে সঙ্গে সঙ্গে পানি খাবেন না।
- লেবু কিংবা আচারঃ খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে এবং রুচি বৃদ্ধিতে লেবু কিংবা আচার অদ্বিতীয়। আপনি নিঃসন্দেহে এটি খাবারের সাথে খেতে পারেন।
- জিংক যুক্ত খাবারঃ ডিম,দুধ, পনির, বাদাম,রেডমিট,মাশরুম পালং শাক, ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে জিংক উপাদান বিদ্যমান যেগুলো খাবার প্রতি রুচি বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।
- আদাঃ খাবারের পূর্বে সামান্যাদা চিবিয়ে খেলে মুখের রুচি বাড়ে।
- পরিবারের সদস্যদের সাথে খাবার খাওয়াঃ পরিবারের সদস্যদের সাথে একসাথে বসে খাবার খেলে দেখবেন আপনার খাবারের প্রতি অনিহা আসছে না বরং গল্প কিংবা কথা বলার তালে তালে আপনি অনেক খেয়ে ফেলছেন। এই পদ্ধতি টনিক এর মত কাজ করে।
- কিছু খাদ্যাভ্যাস ত্যাগঃ দুধ চা, করা লিকার চা ,কিংবা অ্যালকোহলিক বেভারেজ খাওয়া এবং এর পাশাপাশি ধূমপান করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। এগুলো সাধারণত আপনার খাবার রুচি কমিয়ে দেয়।
- দুদ্ধ জাতীয় খাবারঃ মুখের স্বাদ ফেরাতে দুধ, দই ,পনির, মিল্কশেক হতে পারে দারুণ সব খাবার।
- মধুর ব্যবহারঃ যেহেতু এটি একটি প্রাকৃতিক এবং সুস্বাদু খাদ্য উপাদান সেও তো অবশ্যই আপনি এটি আপনার দৈনিন্দন খাবারের একটি অংশ হিসেবে যোগ করতে পারেন তবে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে ডায়াবেটিস কিংবা অন্যান্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা গুলো সম্পর্কে।
- মন প্রশান্ত রাখাঃ স্ট্রেস কিংবা যেকোনো ধরনের চিন্তা মুখে রুচির জন্য অনেক ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম সামাজিক সংযোগ, পরিবার পরিজনের সাথে আড্ডা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো হতে পারে এবং এর সাথে সাথে এটি আপনার খাবারের রুচি বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।
কোন ভিটামিন খেলে রুচি বাড়ে
কিছু ভিটামিন কিংবা ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার রয়েছে যা কিনা মুখে রুচিকে প্রভাবিত করতে পারে এবং মুখের রুচি বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয়। নিম্নে সে ভিটামিন গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
- ভিটামিন বিঃ ভিটামিন বি মুখের রুচির বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।এর পাশাপাশি ভিটামিন বি ধারণ করা অনেক জনের প্রতিদিনের চাহিদা মিটানোর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত মাংস, দুধ, পনির, দই , সহ সব রকম দুদ্ধ জাতীয় খাবার, ডিম, মাছ ,ঝিনুক, পালং শাক, বিট, মাশরুম ,মটরশুঁটি ,ছোলা ,বাদাম তরমুজ ,ইত্যাদি খাবার সমূহ ভিটামিন বি এর উৎস। এই জাতীয় খাবার দৈনন্দন খাদ্যাভাসে যুক্ত করলেন শরীরে ভিটামিন বি এর অভাব পূর্ণ হবে এবং এর পাশাপাশি খাওয়ার রুচি বাড়বে।
- ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি মুখের রুচি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক বেশি সহায়ক। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন জাম্বুরা, আমড়া ,আনারস মালটা জুস, লিমন, লাইভাস আঙ্গুর, গোলাপ পেটাল, আমলকি , লেবু, কমলা ,মালটা, আনারস ,ব্রুকলি, গাজর, টমেটো ক্যাপসিকাম, ইত্যাদি আপনার মুখের রুচি বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট কার্যকর। আপনি চাইলে নিয়মিত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলগুলো খেয়ে দেখতে পারেন।
- ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি যেমন আপনার খাবারের রুচি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে ঠিক তেমনি ভাবেই এটি আপনার ত্বককে আরো সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলবে। চর্বিযুক্ত মাছ-মাংস, দেশি গরুর দুধ, ইত্যাদি সাধারণত ভিটামিন টি সমৃদ্ধ খাবার। এর পাশাপাশি অতি বেগুনি আলোর সংস্পর্শে আসা মাসুম ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস এবং আমরাও চাইলেও প্রাকৃতিক উৎপাদিত ভিটামিন ডি যার উৎপত্তিস্থল সূর্যের আলো তার আশ্রয় নেওয়ার কথা ভুলতে পারি না।
- ফলিক অ্যাসিডঃ ফলিক এসিড কিংবা ফলেট ভিটামিন রুচি বাড়াতে আপনাকে সাহায্য করে করবে। গাঢ় পাতাবহুল সবজি যেমন শাক, সরিষার শাক, বাঁধাকপি এবং এর সাথে বিষ জাতীয় শস্য ইত্যাদিতে আপনি এ ধরনের ভিটামিন পাবেন। এর সাথে সাথে কলিজা এবং কমলার রসেও ফলেট ভিটামিন বিদ্যমান।
- জিংকঃ জিংক আপনার খাবার রুচি বাড়ানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকরী প্রমাণিত হতে পারে। ডিম , দুধ, পনির, রেড-মিট মাশরুম পালং শাক, ইত্যাদি জিংক উপাদান সমৃদ্ধ কিছু খাবার।
রুচির সিরাপ কোনটা ভালো
খাওয়ার রুচি বৃদ্ধির সিরাপ গুলো সাধারণত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে থাকে যার কারণে আমাদের মতে এগুলো গ্রহণ করা খুব একটা উপযোগী হবে না। এর পরিবর্তে আপনারা চাইলে নিজের খাদ্যাভ্যাস চাহিদা মত ভিটামিন গুলো যুক্ত করার মাধ্যমে খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি করতে পারবেন। তবুও পাঠকদের উদ্দেশ্যে আমরা পাঁচটি রুচি বৃদ্ধির সিরাপের কথা উল্লেখ করতে চলেছি।
আরও পড়ুনঃ চুল পড়ার কারণ ও চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
(১)vitalgin200ml
(২)Zovia gold 200ml
(৩)Revital 200ml
(৪)Livwel 200ml
(৫) Amlacid syrup
তবে এক্ষেত্রে এই সিরাপ গুলো সেবন করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক।
কি কি খাবারে রুচি বাড়ে?
এমন কিছু খাবার রয়েছে কিংবা খাবারের উপাদান রয়েছে যে সকল কিছু খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি করতে সক্ষম চলুন জেনে নেওয়া যাক এরকম কিছু ফলমূল, খাবার এবং মসলা সম্পর্কে।
- মসলাঃ আপনি যদি রান্নাই এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ এবং গোল মরিচের মত মসলা ব্যবহার করেন তাহলে বুঝতে পারবেন এটি আপনার জন্য উপকারী হচ্ছে এসব মশলার ঘ্রাণ সাধারণত রুচি বাড়াতে সহযোগিতা করে।
- দুগ্ধ জাতীয় খাবারঃ দুগ্ধ জাতীয় খাবার সহজে শক্তি জগাতে এবং মুখের রুচি বাড়াতে অনেক বেশি সহায়ক। দুধ, মাখন, পনির, মিল্ক শেক, বাদাম শেক, দই, লাচ্ছি ইত্যাদি মুখের রুচি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি মেটানোর জন্য ষও অনেক বেশি প্রয়োজনীয়।
- আদার রসঃ আপনি চাইলে আদা এবং এর সাথে দারুচিনি পানিতে ফুটিয়ে রস করে খেতে পারেন এতে আপনার মুখের রুচি বৃদ্ধি পাবে। এর পাশাপাশি লবণ এবং আদাম চিবিয়ে খেলেও একই ধরনের কাজ করবে।
- আপেলঃ আপেল ফল খাবারের রুচি বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে থাকে।
- রসুন এবং রসুনের স্যুপঃ তিন থেকে চার কোয়া রসুন এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে আপনি যদি দিনে দুইবার পান করেন তাহলে দেখবেন অল্প কয়েক দিনে খাবারের প্রতি অরুচি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।
- পেয়ারাঃ রুচি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই ফলটি অনেক বেশি কার্যকরী। আপনি যদি পেয়ারার সিদ্ধ করে চটকে ছেঁকে বীজ বাদ দিয়ে তা লবণ কিংবা চিনির সাথে মিশিয়ে খেলে এর উপকারিতা বুঝতে পারবেন।
- নিমঃ যখন অরুচি একদমই কমানো সম্ভব হবে না সে অবস্থায় সুজির হালুয়া এর সাথে নিম পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে কয়েকদিন যাবত খেলে আশানুরূপ ফল পাওয়া সম্ভব।
- কমলাঃ কমলা সাধারণত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলগুলো খাদ্যের রুচি বৃদ্ধিতে অনেক সহায়ক হয়। প্রতিদিন ১ থেকে ২ টি কমলা খেলে রুচি দূর হয়।
- আমলকির জুসঃ আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি বিদ্যমান যা মুখের রুচি বাড়াতে অনেক বেশি সহায়ক। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে আমলকি পানিতে ফুটিয়ে রস করেও খেতে পারেন অথবা জুস করেও এটি খাওয়া যায়।
- লেবুর শরবতঃ আপনি যদি নিয়মিত দুই থেকে তিন গ্লাস লেবুর শরবত পান করেন তাহলে দেখবেন খাবারের প্রতি আপনার রুচি ফিরে এসেছে এর পাশাপাশি ভাতের সঙ্গে লেবু চিপেও খেতে পারেন।
- মুরগির মাংসঃ মুরগির মাংস প্রচুর পরিমাণে আমিষ সমৃদ্ধ একটি খাবার। আমি সাধারণত মুখে রুচি বাড়াতে এবং শক্তি জগাতে সাহায্য করে থাকে। আপনি চাইলে মুরগির মাংস যদি এমনি খেতে ইচ্ছে না করে তাহলে সুপ করেও খেতে পারেন সুপ অত্যন্ত সহজপাচ্য একটি খাবার এবং পাশাপাশি পুষ্টির সহজ উৎস।
- আমড়াঃ যখন মনে হবে একদমই কোন কিছুতে কাজ হচ্ছে না সে ক্ষেত্রে আপনাকে আমড়ার আশ্রয় নিতে হবে। আমড়া গাছের মাঝের অংশের ছালের রস এক চামচ মাত্রায় আধা কাপ পানির সাথে মিশিয়ে একটি লবণ ও চিনির সাথে মিশিয়ে শরবতের মত খেলে আপনি উপকারিতা আস্তে আস্তে লক্ষ্য করবেন।
- তেজপাতাঃ খাবারের প্রতি রুচি বৃদ্ধি করতে তেজপাতা অনেক সহায়ক হতে পারে। তেজপাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলি করলে অরুচি ভালো হওয়ার অনেক বেশি সম্ভাবনা থাকে।
- কুলঃ কুল অনেকেরই প্রিয় একটি ফল এবং এর পাশাপাশি এটি বায়ুনাসক ও হজম শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসেবে কাজ করে। কুল ও গোল মরিচের গুঁড়ার সাথে লবণ ও চিনি মিশিয়ে মাঝে মাঝে খেলে যেমন পেটের বায়ু কমবে ঠিক তেমনভাবেই অরুচি জনিত সমস্যা থেকেও পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে।
খাওয়ার রুচি বৃদ্ধির দোয়া
সাধারণত বিভিন্ন কারণে খাবারের প্রতি অরুচি সৃষ্টি হয় শারীরিক অসুস্থতা, মানসিক অশান্তি ,অবসাদ, ইত্যাদি। এক্ষেত্রে আমাদের উল্লেখ করা কৌশল গুলোর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। পাশাপাশি কোরআনের আমলও করা যেতে পারে। যদি কেউ ক্ষুধা থাকা সত্ত্বেও খাওয়া দাওয়া করতে না পারে তবে প্রতিদিন নিম্নলিখিত দোয়াটি ২১ বার করে পড়লে মহান আল্লাহতালা রহমতে তিনি উক্ত সমস্যা হতে পরিত্রান পাবেন।
উচ্চারণঃ ওয়া লাও লা ফাদলুল্লাহি আলাইকুম ওয়া রাহমাতুহু; ওয়া ইন্নাল্লাহা তাওয়্যাবুন হাকিম।'
অর্থঃ তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে (তোমরা ধ্বংস হয়ে যেতে); আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী ও বড়ই প্রজ্ঞাময়। (সুরা নুর : আয়াত ১০)
আমাদের শেষ কথা
খাবারের অরুচি জনিত সমস্যা সাধারণ কোন সমস্যা নয় বরঞ্চ এটি ভবিষ্যৎ কোন রোগের এটি বড় লক্ষণ যার ফলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হতে হবে। অন্যথায় শারীরিক দুর্বলতা সহ নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়ে যায়। আশা করি আমাদের নিবন্ধে উল্লেখিত কৌশল গুলো আপনাদের এই ধরনের সমস্যা থাকলে তার থেকে পরিত্রাণ পেতে সহযোগিতা করবে। তবে আমরা পরামর্শ দেই সর্বপ্রথম একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে এবং তাদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করার এবং শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আপনাকে নিবন্ধে উল্লেখিত খাবার কিংবা কৌশল গুলো অবলম্বন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। ধন্যবাদ।
ইজি গ্রাব ওয়েব এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url