বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়

রাজশাহীর সেরা অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞদের তালিকা"বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়" নিয়ে আজকের প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করতে চলেছি। বর্তমান সময়ে কম বেশি সকল বয়সের মানুষই বাপের ব্যথায় ভুগছেন। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবন সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রেও অনেক সময় বা বাঁধার সৃষ্টি করে এবং এই ব্যথা বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য অনেক অস্বস্তিকর এবং কষ্টদায়ক।

বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়

চিকিৎসা ব্যতীত কিছু ঘরোয়া টোটকা অবলম্বনের মাধ্যমেও বাতের ব্যথা কিছুটা হলেও নিরাময় করা সম্ভব। আজকে আমরা সেই সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং এর পাশাপাশি বাতের ব্যথার লক্ষণ, কি খেলে বাতের ব্যথা বাড়ে এবং কমে এর আয়ুর্বেদিক ওষুধ সহ সম্বন্ধিত কিছু বিষয় বস্তুর উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করব।

ভূমিকা

বাত এক ধরনের সিস্টেমিক ডিজিজ যা কিনা পুরো শরীরের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। সাধারণত মানব দেহের অস্থিসন্ধে ইউরিক অ্যাসিড জমা হওয়ার মাধ্যমে এ রোগের উৎপত্তি ঘটে।মুত্রের মাধ্যমে স্বাভাবিক ইউরিক এসিড বেরিয়ে যায় কিন্তু আমাদের যকৃৎ যখন বেশি পরিমাণে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে তখনই তা রক্তে পরিমাণ বাড়ায়। কিডনি যখন রক্ত থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার করতে পারে না তখন বাতের উপসর্গ গুলো দেখা যায়।বিভিন্ন হাড়ের সংযোগস্থল অর্থাৎ অস্থিসন্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে বাতের ব্যথা শুরু হয়।
এই রোগে প্রধানত অস্থিসন্ধি আক্রান্ত হলেও হাড়ের প্রদাহ, ক্ষয় রোগ, লিগামেন্ট ও টেন্ডনের ব্যথা, মাংসপেশীর ব্যথা,মেরুদণ্ডের প্রদাহ, ক্ষয়, আড়ষ্ঠতা এগুলোও বাতরোগের পর্যায়ে পরে। অনেকেই মনে করেন কেবল বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায় আসলে কিন্তু তা নয় বাতের ব্যাথা দেখা দিতে পারে যে কোন বয়সেই। বাতের ব্যথার কষ্ট সম্পর্কে কেবল ভুক্তভোগীরায় অবগত। এই ধরনের ব্যথা আপনার দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্ষমতা কে ব্যাহত পর্যন্ত করতে পারে। তাই এর দ্রুত নিরাময় ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়

জীবন যাপনের ক্ষেত্রে ভুল ত্রুটি, পরিবেশের প্রভাব কিংবা বংশগত কারণে বাতের ব্যথার মতো রোগ শরীরে বাসা বেঁধে ফেলে। সাধারণত হাড়ের জোড়ের ক্ষয় ও সংক্রমণ থেকে বাতের ব্যথার সুপ্রপাত ঘটে। বাতের ব্যথা কিংবা আর্থ্রাইটিস রোগীর জন্য অনেক প্রচলিত চিকিৎসা রয়েছে এর পাশাপাশি এই রোগের ওষুধ যথেষ্ট শক্তিশালী যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করার পাশাপাশি অন্ত্রের ক্ষতিসাধন করার মতো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। 
তবে প্রচলিত চিকিৎসাগুলোর ভিতরে ঘরোয়া কিংবা প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলো তাদের কার্যকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার অভাবের কারণে ক্রমশই সকলের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু বাতের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে যা কিনা তাদের কার্যকারিতার জন্য যথেষ্ট প্রচলিত।

  • আদাঃ আদা এমন একটি মসলা যা আমাদের সকলেরই বাসা বাড়ির রান্নাঘরে উপস্থিত থাকে। কিন্তু অনেকেই এ সম্পর্কে অজানা যে বাতের ব্যথা কিংবা আর্থ্রাইটিস রোগ নিরাময়ের জন্য এটি যথেষ্ট কার্যকরী। খাদ্যাভাসে আদা যুক্ত করা জয়েন্টের ব্যথা এবং শক্ত হওয়া কমাতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি গরম জলে তাজা আদা ব্যবহারের মাধ্যমে আদা চা খাওয়াও যথেষ্ট কার্যকর হবে।
  • খাবারে হলুদের ব্যবহারঃ বাতের ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে আদর্শ একটি মসলা হল হলুদ। হলুদের সংক্রমণ বিরোধী উপাদান শরীর ও জয়েন্টের ব্যাথা সারাতে অনেক বেশি উপকারী।
  • খালি পায়ে হাঁটাঃ বাতের ব্যথা কিংবা পেশির ব্যথা কমানোর সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো খালি পায়ে হাঁটা। এতে ব্যথা প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে এবং এর পাশাপাশি চিকিৎসকের মতামতের ভিত্তিতে পায়ের গড়ন অনুসারে জুতা পরিধান করা উচিত এবং যতটা সম্ভব উঁচু জুতা পড়া হতে বিরত থাকা উচিত।
  • গরম এবং ঠাণ্ডা থেরাপিঃ জয়েন্টের ব্যথা কিংবা প্রদাহ কমানোর ক্ষেত্রে গরম কিংবা ঠান্ডা থেরাপির ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকর। ব্যথা অনুভূত জায়গায় একটি গরম কমপ্রেস প্রয়োগ করার ফলে পেশী শিথিল হয় এবং এর পাশাপাশি রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে। অপরদিকে ঠান্ডা থেরাপি ব্যথা অনুভূত জায়গা প্রয়োগ করলে সেই জায়গাটুকু অসার করতে এবং খোলা হ্রাস করতে সহায়তা করে।
  • ঘরোয়া মিশ্রণঃ ব্যথা কমানোর জন্য আপনি চাইলেই বাসাতে একটি কার্যকরী মিশ্রণ তৈরি করে নিতে পারেন। প্রথমত কয়েক চামচ লঙ্কাগুড়ো সঙ্গে ২-৩ চামচ অয়েল নিন। এবং এই দুটোর মিশ্রণ এর মাধ্যমে তৈরি করে ফেলুন জাদুকরী এক ঔষধ। এটি অত্যন্ত প্রাচীন একটি দেশজ পদ্ধতি। এই মিশ্রণটি প্রয়োগের পর প্রথম দিকে খুব জ্বালা অনুভূত হতে পারে কিন্তু আস্তে আস্তে এর কার্যকারিতা আপনি স্বয়ং বুঝতে পারবেন এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
  • যোগব্যায়ামঃ পেশীর জয়েন্টের নমনীয়তা উন্নত করতে এবং এর সাথে সাথে ব্যথা কমাতে যোগব্যায়াম যথেষ্ট কার্যকরী একটি উপায় এর পাশাপাশি নিয়মিত যোগব্যায়াম অনুসরণ করা মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী প্রমাণিত হয়।
  • উপযুক্ত খাদ্যাভাসঃ বাতের ব্যথা হতে মুক্তি পেতে হলে এই সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করবে এমন সকল খাবার খাদ্যাভাসে থাকতে হবে। আঁশ জাতীয় খাবার এক্ষেত্রে অনেক উপকারী হতে পারে। এছাড়াও সতেজ শাকসবজি, ফলমূল প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। এর পাশাপাশি আপনাকে কমাতে হবে প্রক্রিয়াজাত চিনি শস্য তেল ও ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত লবণ খাওয়া হতে বিরত থাকতে হবে এবং ফাস্টফুড কিংবা প্যাকেটজাতকরণ খাবার যতটা এড়িয়ে চলবেন তত ভালো।
  • মালিশঃ পেশীর জয়েন্টের ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে মালিশের কোন ধরনের বিকল্প হয় না। তেল কিছুটা গরম করে জয়েন্ট এর উপর ভালোভাবে ম্যাসাজ করলে দেখবেন অল্প সময়ে খুব বেশি উপকারিতা লাভ করছেন। এর পাশাপাশি আপনি যদি একজন পেশাগত ম্যাসাজ থেরাপিস্ট এর কাছে ম্যাসাজ সেবা নিয়ে থাকেন তবে দেখবেন আরও দ্রুত ব্যথা নিরাময় হচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে ভুলভাল মালিশ ডেকে আনতে পারে আরো নতুন কোন সমস্যা।
  • গরম - ঠান্ডা জলের চিকিৎসাঃ চট জলদি ব্যাথা হতে মুক্তি পেতে চাইলে এটি হতে পারে আপনার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি। এর জন্য প্রথমত একটি পাত্রে বরফ দেওয়া ঠান্ডা জল এবং অন্য একটি পাত্রে গরম জল নিন। প্রথমে গরম জলে এক মিনিট ব্যথার জায়গা ডুবিয়ে রাখুন এবং পরবর্তী সময়ে ৩০ সেকেন্ড ঠান্ডা জলে। এইভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার পর দেখবেন অনেকটা আরাম অনুভূত হচ্ছে।
  • গ্রিন-টিঃ বিশেষজ্ঞদের মতে দিনে ৪ কাপ গ্রিন টি বাতের ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এতে রয়েছে পলিফেলন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বাত ব্যথা কিংবা যেকোনো ধরনের পেশির ব্যথা কমাতে যথেষ্ট কার্যকরী।
  • ওজন ব্যবস্থাপনাঃ বাত ব্যথার উপসর্গ গুলো পরিচালনা করার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শরীরের অতিরিক্ত ওজন থাকার ফলে জয়েনগুলোতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে যা ব্যথা এবং প্রদাহ গুলোকে কয়েক গুনে বাড়াতে কিংবা আরো খারাপের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
  • ইস্পম লবণ এর ব্যবহারঃ ইস্পম লবণ একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার যা জয়েন্টের ব্যথা কিংবা প্রদাহ নিরাময় করতে অনেক বেশি উপযোগী একটি উপাদান। উষ্ণ স্নানের সাথে ইস্পম লবণ যুক্ত করা আপনার পেশিগুলো কি শীতল করতে এবং ব্যথা কমাতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে।
  • অ্যালোভেরা ব্যবহারঃ আ্যলোভেরা আমাদের সকলেরই চেনা একটি উদ্ভিদ। এবং এর গুনাগুন সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত। বাতের ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রেও এর গুনাগুন আমাদের নিরাশ করে নি। জয়েন্টের ব্যথা কমতে এবং এবং ফোলা কমাতে এটি যথেষ্ট কার্যকরী। আপনি চাইলে সরাসরি আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরার জেল লাগাতে পারেন কিংবা ব্যথা কমাতে অ্যালোভেরার রসও পান করতে পারেন।
  • উপযোগী তেলঃ প্রদাহ বিরোধী এবং ব্যথা উপশমকারী বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ কিছু তেল আপনাকে ব্যথা হতে মুক্ত করতে পারে। পেপারমিন্ট, ল্যাভেন্ডার, এবং ইউক্যালিপটাস এর মত প্রয়োজনীয় তেল গুলি বাতের ব্যথা প্রতিরোধে যথেষ্ট কার্যকর। এটি জয়েন্টের ব্যথা এবং তার শক্ত হওয়া কমাতে সাহায্য করে।
  • ক্যাপসাইকিনঃ ক্যাপসাইকিন এক ধরনের যৌগ যা মরিচের ভিতর পাওয়া যায় এবং এতে ব্যথা উপশমকারী বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ব্যথা আক্রান্ত স্থানে ক্যাপসাইকিন ক্রিম প্রয়োগ করা ব্যথা হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে।
  • সাঁতার কাটাঃ বাতের ব্যথার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম হলো সাঁতার। জলের মধ্যে ভারশূন্যতা পেশীর চাপ অনেকটাই কমিয়ে দেয়।তাইওয়ানের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে সাতার হাঁটু এবং নিতম্বের জোর বাড়ায় এবং এর পাশাপাশি শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলাঃ বাতের ব্যথা ভোটে বাঁচতে হলে জাঙ্ক ফুড কিংবা প্যাকেটজাতকরণ খাবার, ফাস্টফুড এবং ভাজাভুজি খাদ্য যতটা এড়িয়ে চলবেন ততটা ভালো। যারা মশলতার খাবার ছেড়ে বেশি পরিমাণে সতেজ সবজি, ফলমূল মাছ তাদের খাদ্যাভাসে অন্তর্ভুক্ত করেন তাদের বাতের ব্যথা হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমে আসে।
  • বাদামঃ আর্থ্রাইটিস কিংবা বাতের ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে বাদাম খুব উপকারী। আখরোট, পেস্তা, কাজুবাদাম, চিনা-বাদাম ইত্যাদি ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, জিঙ্ক ও ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাদ্য যা কিনা পেশীর ব্যথা সারাতে এবং এর পাশাপাশি এর শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • বিশ্রাম এবং শিথিলকরণঃ বাতের ব্যথার উপসর্গগুলি সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং শিথিল করণ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। আপনার শরীরের জয়েন্ট গুলো কে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম এবং এর পাশাপাশি বিরতি নেওয়ার চেষ্টা করুন।

বাতের ব্যথার লক্ষণ গুলো কি কি?

সাধারণত বাতের ব্যথা বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। সব ধরনের বাতের ব্যথার সাধারণ কিছু উপসর্গ হলো-
  • বিভিন্ন মাত্রার ব্যথা
  • অস্থি সন্ধির ফোলা এবং শক্ত হয়ে যাওয়া
  • গিঠেঁর চারপাশে স্থায়ী যন্ত্রণা অনুভব করা
এছাড়াও অন্যান্য কিছু লক্ষণ গুলো হলোঃ
  • পেশীতেব্যথা ও দুর্বলত অনুভব করা।
  • বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা অনুভব করা
  • হাত পা ঝিমঝিম করা
  • হঠাৎ করে শরীরে যে কোন অংশ ফুলে যাওয়া কিংবা ফুলা ভাব হওয়া
  • অল্প অল্প জ্বর হওয়া
  • হাত বা পা নাড়াতে অসুবিধা হওয়া
  • পায়ের গোড়ালি এবং জড়ায় অত্যাধিক ব্যথা অনুভব করা
  • ব্যথা কমে যাওয়ার পরবর্তী সময়েও ব্যথায় আক্রান্ত স্থান ফুলে থাকা
  • নখ, হাতের কব্জি, কুনুইসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা অনুভব করা
  • পরিমিত পরিমাণ ঘুম না হওয়া
  • হাত ব্যবহারে অক্ষমতা
  • অনেক সময় হাঁটতে অক্ষমতা অনুভব করা
  • ওজন ক্রমশায় কমে আসা
  • অসৎ ছন্দ কিংবা গ্লানিবোধ অনুভব করা
  • মুখের অভ্যন্তরে ঘা হওয়া
  • এমনকি ত্বক এ র‍্যাশ হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে

কি খেলে বাতের ব্যথা বাড়ে

বাপের ব্যথা যে শুধুমাত্র বয়স বাড়ার সাথে সাথে হয় এ ধারণা কিন্তু ভুল। যেকোনো বয়সেই এই সমস্যা হতে পারে। আবার খাবারের এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা সাধারণত ইনফ্ল্যামেটরি বাত ব্যথা উদ্রেগকারী। তাই বাতের ব্যথা অনুভূত হওয়া শুরু হলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্তই সঠিক হবে। এইরকম কিছু খাবার হলঃ
  • অতিরিক্ত লবণঃ বাতের ব্যথার সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকা শ্রেয়। লবণে থাকা সোডিয়াম বাতের ব্যথা বৃদ্ধি করতে পারে।
  • অতিরিক্ত চিনিঃ অতিরিক্ত চিনি বাতের ব্যথায় বৃদ্ধিতে সহায়ক। বিশেষভাবে ক্যান্ডি চকলেট, ঠান্ডা পানীয় কিংবা আইসক্রিমে যে অতিরিক্ত মিষ্টি থাকে তা বাতের সমস্যা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এ সকল খাবার এবং সাথে অতিরিক্ত চিনি বর্জন করা আবশ্যক।
  • ডিমের কুসুমঃ পুষ্টির হিসাবে ডিমের কুসুম অবশ্যই সব খাদ্যের তুলনায় থেকে এগিয়ে থাকে। তবে বাতের ব্যথার ক্ষেত্রে তা কিছুটা ভিন্ন। ডিমের কুসুমে এরা আ্যরাকিডনিক আ্যসিড বিদ্যমান যা বাতের ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। সুতরাং এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে আপনি চাইলে ডিমের সাদা অংশ অনায়াসে খেতে পারবেন।
  • দুদ্ধ জাতীয় খাবারঃ বাতের ব্যথা বিশেষ করে যাদের কোমরে ব্যথা হয় তাদের ক্ষেত্রে দুধ উপকারে নাও আসতে পারে। দুধ কিংবা দুদ্ধ জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বিদ্যমান যা অস্থিসন্ধির আশেপাশে যে টিস্যুগুলো আছে তাতে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। তাই দুদ্ধ জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।
  • রেড মিট কিংবা লাল মাংসঃ রেড মিট কিংবা লাল মাংস রয়েছে কেমিক্যাল পিউরিন নাইট্রাইট যা প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়। এর পাশাপাশি লাল মাংসের যে গ্লাইকেশন রয়েছে তা ব্যথা তৈরি করে।
  • বেগুনঃ বেগুন ভাজা অনেকের পছন্দের খাবার। কিন্তু এই বেগুন বাতে রোগীদের জন্য মোটেও উপকারী নয় বরং ক্ষতিকর। বেগুনের সোলানাইন নামক যৌগ বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পান যা বাতের ব্যথায় প্রভাব সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি এমন অবস্থায় বেগুন খেলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • কফিঃ ক্যাফাইন নামক উপাদান থেকে কফি সৃষ্টি হয় তা আমরা কম বেশি সকলে জানি। কিন্তু উচ্চমাত্রায় ক্যাফাইন হার দুর্বল করে জয়েন্টের ব্যথা বাড়িয়ে দেয় তাই যাদের বাতের সমস্যা আছে তাদের এ ধরনের পানীয় থেকে দূরে থাকা উচিত।
  • গ্লুটেন সমৃদ্ধ খাবারঃ গ্লুটেন সমৃদ্ধ খাবার বাড়ি দিতে পারে বাতের ব্যথা সমস্যা। আর এই বিশেষ প্রোটিন গম, বার্লি ইত্যাদির মতো দানাদার শস্যতে বিদ্যমান থাকে। সুতরাং এগুলো না খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
  • ভুট্টার তেলঃ ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৬ এসিড বিদ্যমান। আর এই এসিডের ফলে বেড়ে যেতে পারে শরীরের প্রদাহ। তবে এটি খাদ্যাভ্যাস থেকে একদমই সরিয়ে ফেলা যাবে না খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে।
  • মদ্যপানঃ কারো যদি মদ্যপান করার মত বদভ্যাস থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই অতি দ্রুত এটি ছাড়তে হবে। কারণ অ্যালকোহল অস্টিওআর্থারাইটিসের ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।
  • এর পাশাপাশি টমেটো, লেবু, আমরা জাতীয় ফল ও শিকড় জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো এবং এর পাশাপাশি খাওয়া কমাতে হবে ময়দা ও সাদা চিনি কারণ এগুলো ব্যথা ও বেদনা বাড়িয়ে দেয়।

কি খেলে বাতের ব্যথা কমে

বাতের ব্যথা হতে নিরাময় লাভ করতে চিকিৎসা এবং ওষুধ সেবনের পাশাপাশি আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে কিছু খাদ্য যুক্ত করি তাহলে তুলনামূলক সহজে এই অস্বস্তিকর ব্যথা হতে মুক্তি লাভ করতে পারি।
  • আখরোটঃ আখরোট ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ এবং এই ওমেগা ৩ আর্থারাইটিস এর ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক।
  • ছোট মাছঃ ছোট মাছ শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং এর পাশাপাশি বাতের ব্যথা নিরাময় করতেও এটি উপযোগী।
  • আদা ও হলুদঃ সকলেরই বাসা বাড়িতে বিদ্যমান থাকা আদা,হলুদ কিংবা রসুনের মত মসলা বাতের ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আদার জয়েন্টের ব্যথা এবং শক্ত হওয়া কমতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি হলুদ এ থাকা সংক্রমণ বিরোধী উপাদান সমূহ শরীর ও জয়েন্টের ব্যাথা সাড়াতে অনেক বেশি উপকারী।
  • সামুদ্রিক মাছঃ স্যামন,ম্যাকেরেল এবং সারডিনের মত সামুদ্রিক মাছ বাতের ব্যথা হতে মুক্তি পেতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এ ধরনের সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে এবং এর পাশাপাশি এই মাছগুলোকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় যা আমাদের অস্থিসন্ধির স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখে।
  • বাদামঃ পেস্তা, কাজুবাদাম, চিনা-বাদাম ইত্যাদি ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, জিঙ্ক ও ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাদ্য যা কিনা পেশীর ব্যথা সারাতে এবং এর পাশাপাশি এর শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং জয়েন্ট গুলোকে রাখে সুরক্ষিত।
  • অ্যালোভেরা রসঃ অস্থি সন্ধির ব্যথা কমাতে এবং এর ফোলা ভাব কমাতে আপনি চাইলে অ্যালোভেরা রস পান করতে পারেন।
  • পালং শাকঃ পালংশাকে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। বিশেষভাবে ক্যাম্পফেরল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাতের ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত।
  • রসুনঃ রসুনের প্রদাহ নাশক গুণাগুণ বিদ্যমান। বাতের ব্যাথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে খাদ্যাভাসে আপনি চাইলে এটি যুক্ত করতে পারেন। এর পাশাপাশি এক কোয়া রসুন কুচিয়ে অল্প গরম তেলে মিশিয়ে এই মিশ্রণ যদি জয়েন্টে ম্যাসাজ করেন তাহলে অবশ্যই পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
  • মটরশুঁটিঃ মটর শুঁটিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা বাতের ব্যথা কমাতে কার্যকর। এছাড়াও মটরশুঁটি ফলিক এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, এবং জিংক সমৃদ্ধ। যা পেশীর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য উপযোগী।
  • গ্রিন টিঃ গ্রিনটিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার দেহে প্রদাহ কমাবে। তাই বাতের ব্যথা কমাতে গ্রিন টি দারুন উপকারি একটি পানীয়।
  • ব্রকলি এবং বাঁধাকপিঃ মূলত ব্রকলিতে সালফোরাফেন নামক উপাদান বিদ্যমান থাকে যা অস্টিওআর্থারাইটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা হ্রাস করে এবং এর পাশাপাশি এর মধ্যকার ক্যালসিয়াম সুস্থ হাড় গঠনে তাৎপর্যপূর্ণ। ব্রকলি এবং বাঁধাকপি মূলত ক্রুসিফেরাস পরিবারের সদস্য। এই ক্রুসিফেরাস সবজিগুলো ভিটামিন এ, সি এবং কে এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জাকিরা বাদ জনিত বাধারোধ করতে অত্যন্ত কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত।

বাতের ব্যথার আয়ুর্বেদিক ওষুধ

বাতের ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন ভেষজ গুলো অনেক বেশি কার্যকর। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কে যা আপনাকে বাতের ব্যথা হতে মুক্তি দিতে পারে।
  • দশমূলঃ দশমূল হলো দশটি ঔষধি গাছের মিশ্রণ যাতে পাঁচটি গুল্ম এবং পাঁচটি শিকড় রয়েছে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যানালজেসিক, এর মতো বৈশিষ্ট্য গুলো আর্থ্রাইটিস এর চিকিৎসায় অনেক বেশি কার্যকরী। আপনি যদি চান তাহলে একটি তেল কিংবা পাউডার আকারেও ব্যবহার করতে পারেন।
  • গুগুলুঃ গুগুলু সবচেয়ে মূল্যবান আয়ুর্বেদিক উপাদান গুলোর ভিতর একটি। এটি আসলে মুকুল গাছের আঠা রজন।গুগুলু এই শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাবের কারণে বাতূ ব্যথার নিরাময়ের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ঐতিহ্যগতভাবে এই উপাদানটি স্থূলত্ব, প্রদাহ জনিত ব্যাধি এবং এর পাশাপাশি আর্থ্রিটিক রোগের চিকিৎসার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
  • নির্গুন্ডিঃ নির্গুন্ডি আয়ুর্বেদের সেরা গোপন রহস্য গুলোর ভিতর একটি। এর শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-আর্থ্রাইটিক প্রভাব রয়েছে, জয়েন্টের ব্যথা হ্রাস করে এবং জয়েন্ট অবক্ষয় থেকে রক্ষা করে। আপনি চাইলে প্রাথমিকভাবে এটি তেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই তেল জয়েন্ট গুলিতে ম্যাসাজ করা হলে বাতের ব্যথা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
  • ঘৃতকুমারীঃ ঘৃতকুমারীতে প্রদাহ বিরোধী এবং নিরাময় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। অ্যালোভেরা কিংবা ঘৃতকুমারী যাই বলেন না কেন এর কোন নেতিবাচক গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল প্রভাব নেই। আপনি অ্যালোভেরা সাধারণত বড়ি পাতা কিংবা জেল আকারে পেতে পারেন। সরাসরি ত্বকে লাগানো নিরাপদ এবং এর পাশাপাশি আপনি চাইলে অ্যালোভেরা মুখ দিয়েও গ্রহণ করতে পারেন যা অস্টিওআর্থারাইটিস ব্যথা উপশম করতে আশানুরূপ ফলাফল দিতে পারে।তবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করার পূর্বে আপনার শরীরে যেকোনো ধরনের সমস্যা হবে না তা ডাক্তারের কাছে নিশ্চিত করতে হবে। কারণ অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।
  • আজওয়াইনঃ আজওয়াইন কিংবা এর বীজে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বাতের ব্যথা কমাতে আপনাকে সহযোগিতা করতে পারে। আপনি চাইলে আজওয়াইনের জল পান করতে পারেন কিংবা এর বীজের পেস্ট তৈরি করে সরাসরি জয়েন্ট গুলোতে লাগাতে পারেন। শীতকালে আর্থ্রাইটিস এর ব্যথা কমাতেও এটি অনেক উপযোগী।এর একটি জনপ্রিয় প্রতিকার পদ্ধতি রয়েছে। যদি গরম জলে এক চামচ আজওয়াইন যোগ করেন এবং এবং সেইখানে আপনার ব্যথাযুক্ত জয়েন্ট গুলি পাঁচ থেকে দশ মিনিট ডুবিয়ে রাখেন তাহলে আপনি সেরা ফলাফল পেতে পারেন।
  • শাল্লাকিঃ প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া বোসওয়েলিয়া গাছ থেকে শাল্লাকি আহরণ করা হয়। এটি আধুনিক ব্যথানাশক বিকল্প গুলোর ভিতর অন্যতম। জয়েন্টের ব্যথা উপশম করতে, ফোলা কমাতে এবং এর পাশাপাশি গতিশীলতা বাড়াতে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। এটি আপনি পাউডার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন কিংবা চাইলে তেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বাজারে দুটোই পাওয়া যায়।
  • আদাঃ আদাতে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এটি পেশিগুলোর জয়েন্টের ব্যাথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে অনেক বেশি উপকারী। হাড়ের অবক্ষয় কে সীমাবদ্ধ করতে আদার কোন বিকল্প হয় না।
  • হলুদঃ এই জনপ্রিয় ভেষজটি সবার রান্নাঘরে বিদ্যমান। আদার স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি এর প্রধান জৈব সক্রিয় যৌগ - কারকিউমিনের সাথে যুক্ত। এই যৌগটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভাবও প্রদর্শন করে যা বাতের ব্যথা এবং জয়েন্টের অবক্ষয় থেকে উপশম এবং রক্ষা করতে পারে।
  • ইউক্যালিপটাসঃ ইউক্যালিপটাস পাতা মূলত ট্যানিন সমৃদ্ধ। যা ব্যথা এবং পোলাও কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই সুগন্ধ মস্তিষ্কের শান্ত রাখতে প্রভাবিত করে।ইউক্যালিপটাসের সাথে অ্যারোমাথেরাপি আপনাকে আর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলি থেকে রক্ষা করতে পারে।

বাতের ব্যথা কমানোর ঔষধ

ডিক্লোমল ট্যাবলেট (Diclomol Tablet) একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বেদনানাশক ওষুধ।এই ড্রাগ টি সাধারণত বাতজনিত লক্ষণ যেমন প্রদাহ ব্যথা, জ্বর, গাট কিংবা জয়েন্টের ফলাফল ইত্যাদি নিরাময় করতে ব্যবহৃত হয়। এই ট্যাবলেটটি তরল সমাধান হিসেবে পাওয়া যায়। প্রতিটি ট্যাবলেট এর প্রভাব ১১ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত থাকে। এই ওষুধের স্ট্যান্ডার্ড প্রস্তাবিত ডোজ হলো দিনে দুইবার। তবে কেবলমাত্র কোন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এই ওষুধটি সে বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 
এ ওষুধের কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে যেমন পেট ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া ডায়রিয়া কিংবা বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি। তাই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ না বাধ্যতামূলক। এর পাশাপাশি এর বিকল্প ওষুধ হিসেবে নিম্নলিখিত কিছু ঔষধের কথা উল্লেখ করা হলো। তবে মনে রাখতে হবে উল্লেখিত ঔষধ গুলো সেবন এর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে কিংবা ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে তা সেবন করতে হবে।
  • Fenak Plus 50mg/325mg Tablet. ...
  • Diclowin Plus Tablet. ...
  • ইন্টাজেসিক ৫০ এম জি/৩২৫ এম জি ট্যাবলেট (Intagesic 50 mg/325 mg Tablet) ...
  • ক্যাডিনেক্সট প্লাস ৫০এম জি/৩২৫এম জি ট্যাবলেট (Cadinxt Plus 50Mg/325Mg Tablet) ...
  • Rhumacort 50 Mg/325 Mg Tablet.
  • এনজিফ্লাম পি ৫০এম জি/৩২৫এম জি ট্যাবলেট (Ngflam P 50mg/325mg Tablet)
  • ন্যাক প্লাস ট্যাবলেট (Nac Plus Tablet)

বাতের ব্যথার ব্যায়াম

বর্তমান সময় এর কথা বিবেচনা করলে বাতের ব্যথা খুব সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যথা দৈনিন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম করার ক্ষমতাকে সীমিত করে ফেলে। বাতের ব্যথা হতে মুক্তি দিতে শরীর চর্চা অনেক উপযোগী একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। বাতের ব্যথায় সুস্থ থাকতে বেশ কয়েকটি ব্যায়াম নিয়ম সম্পর্কে জানা জরুরী যা নিম্নে আলোচনা করা হলো।
  • লেগ রেজঃ প্রথমে মাটিতে টান টান হয়ে শুয়ে দুই হাতে তালু মেঝের উপরে রাখুন এবং এরপর বাম পা আস্তে আস্তে উপরের দিকে তুলুন। ৫ সেকেন্ড এভাবে পা উপরে তুলে রাখুন এবং ধীরে ধীরে নামিয়ে নিন। এই পদ্ধতিতে ডান পা উপরে চলুন এবং আস্তে আস্তে নামিয়ে নিন। শুরুর দিকে দুই পায়ের ক্ষেত্রে চার বার করে আপনি ব্যায়াম করতে পারেন এবং পরে আস্তে আস্তে লেগ রেজের সেট বাড়াতে পারেন।
  • হাফ স্কোয়াটঃ এই ব্যায়ামটি করতে হবে দাঁড়িয়ে। প্রথমত হাত দুটি সামনের দিকে তুলে রাখুন আপনি চাইলে হাত মুঠো করে রাখতে পারেন কিংবা মুঠো ছাড়া আরামেও রাখতে পারেন। এইবার অল্প অল্প করে বসার চেষ্টা করুন। পুরোপুরি বসবেন না। অল্প বসার ভঙ্গি করে আবার উঠে পড়ুন। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে আপনার পিঠ যেন সোজা থাকে কোন রকম ভাবে যেন বেঁকে না যাই এক্ষেত্রে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়তে পারে। অন্তত ১০ বার এমনটা করতে হবে। হাফ স্কোয়াট সাধারণত ব্যথা অনুভূত হতে পারে তবে তা প্রাথমিক কয়েকদিন ব্যায়াম করার পরেই তার সেড়ে যাবে।
  • পুশ আপঃ পুশ আপ এমন এক ধরনের ব্যায়াম যা শরীরের মাংসপেশিগুলোকে মজবুত করতে সাহায্য করে। পুশ আপ সম্পর্কে কম বেশি আমাদের সবারই জানা। প্রথমে মাটির দিকে মুখ করে শুয়ে পড়ুন প্রথমে মাটির দিকে মুখ করে শুয়ে পড়ুন। এবার হাত ও পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে মাটি থেকে দেহ সমান্তরাল ভাবে তুলে ধরুন। কনুই ভাজ করে একবার মাটির কাছাকাছি আবার কনুই সোজা করে মাটির থেকে দূরে নিয়ে যান। প্রথমদিকে হয়তো এটি করতে আপনাদের সমস্যা হতে পারে কিন্তু আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে গেলে শুধু বাতের ব্যথা নয় কিংবা যে কোন ব্যথা হতে রক্ষা পেতে এবং এর পাশাপাশি মাংসপেশীগুলোকে আরো শক্তিশালী করতে আপনি আশানুরূপ ফল পাবেন তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই ব্যায়াম করা কষ্টসাধ্য হয়ে যেতে পারে। সুতরাং তাদের জন্য এটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
  • এছাড়াও বিছানায় সোজা হয়ে বসে তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা সামনের দিকে টানুন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে তা ছেড়ে দিন এই ব্যায়ামও আপনার ক্ষেত্রে অনেক উপকারী হতে পারে।
  • নরম তোয়ালে ভাঁজ করে হাঁটুর নিচে রেখে হাঁটু দিয়ে তোয়ালের এবং ওপর চাপ দিয়ে ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছেড়ে দিন। দিনে ৩-৪ বার এ ব্যায়াম করতে পারেন। প্রতিবার ১০-১৫ বার করুন।

আমাদের শেষ কথা

বর্তমান সময়ে এসে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষেরই বাতের ব্যথা সম্বন্ধিত সমস্যায় পড়তে দেখা যাচ্ছে। আজকের নিবন্ধে আমরা এই সম্বন্ধিতই কিছু বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। আশা করি উপরিক্ত নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে আসবে এবং আশানুরূপ ফল দিবে। তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় সচেতন থাকতে হবে আপনার শরীরের পরিস্থিতি অনুযায়ী যে সকল কৌশল ,খাবার গুলোর কথা বলা হয়েছে তা খাবার পূর্বে কিংবা কৌশল গুলো অবলম্বনে পূর্বে অবশ্যই বিবেচনা করে চিন্তা ভাবনা করে পদক্ষেপ নিবেন। 

এর পাশাপাশি ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের নিকট দারস্থ হবেন।সর্বোপরি একজন চিকিৎসা কর্মীর নিকট হতে চিকিৎসা গ্রহণ করা এবং পরামর্শ নেওয়া সব থেকে বেশি ভালো হবে।ধন্যবাদ সকলকেই।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইজি গ্রাব ওয়েব এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url