গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগলে করণীয় কাজগুলো - ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে গর্ভবতী মায়ের যত্ন

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন দ্রুততম উপায়েআজকের প্রবন্ধে আমরা গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগলে করণীয় কাজগুলো সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। গর্ভকালীন সময় প্রতিটা নারীর জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এটি সময়কাল। আর এই সময়কালে সকল নারী চাই তার গর্ভে থাকা নিজের অংশ বিশেষ কে অর্থাৎ তাদের বাচ্চাকে অনুস্থতা থেকে দূরে এবং অনেক যত্ন সহকারে নিজের গর্ভে রাখতে।


গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মা অসুস্থতার স্বীকার হলে তার গর্ভে থাকা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর হয় আর এই সকল অসুস্থতার মধ্যে ঠান্ডা লাগা অন্যতম। তাই আজকের প্রবন্ধে আমরা গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগলে এর দ্রুত সমাধান ঠান্ডা যেন না লাগে সে বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন এবং এই সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।

গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগলে করণীয় কাজগুলো

গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। যার ফলে গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ঠান্ডা লাগা কিংবা সর্দি অথবা কাশি হওয়ার অভিজ্ঞতাটা কোন সময়ই সুখকর হয় না এবং তা যদি গর্ভাবস্থায় হয় তাহলে তার সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে। কারণ গর্ভাবস্থায় একজন নারী চাইলেও ঠান্ডা লাগা অবস্থায় এর প্রতিকারের জন্য ঔষুধ কিনে এনে খেতে পারবেন না কারণ ঔষুধ খেলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ভ্রুণ এবং মায়ের উপর পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে ঠান্ডা লাগার উপসর্গ গুলো কমানোর জন্য ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবস্থার ব্যবহার করতে হবে। চলুন উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
  • রসুনঃ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক, ও অ্যান্টিভাইরাল গুণসম্পন্ন শক্তিশালী সংমিশ্রণ রসুনের ভরপুর পরিমাণে থাকে। যে সকল ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া সর্দি কাশি সৃষ্টি করে সেগুলিকে প্রতিরোধ করার জন্য রসুন যথেষ্ট কার্যকরী। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ কমাতে রক্ত সঞ্চালন আরো উন্নত করতে এবং রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এছাড়াও রসুনে থাকে অ্যালিসিন যা হবু মায়েদের বিভিন্ন রকমের সুবিধা প্রদান করে থাকে।
  • গরম স্যুপঃ গর্ভাবস্থায় যদি ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে গরম সবজি ও চিকেনের সুপ পান করা উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। এরমধ্যে আদা,রসুন ও পেঁয়াজ যুক্ত করবেন। কারণ এই তিনটি উপাদান সর্দি-কাশি হাত থেকে বাঁচাতে অত্যন্ত কার্যকরী। আর ব্যবহৃত সবজি শরীরের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গরম স্যুপ পান করার ফলে আপনার শরীরে বসে থাকা সর্দিও উঠে আসবে।
  • বাষ্পঃ বাষ্প কিংবা স্টিম সর্দি কাশি নিরাময়ের জন্য অনেক উপযোগী। আপনার ঘরে থাকা গরম মসলা অর্থাৎ এলাচ, কাঠ মসলা, তেজপাতা, ইত্যাদি গরম পানিতে দিয়ে তা ফুটিয়ে আপনি স্টিম নিতে পারেন। এই উপায়টি সম্পর্কে আপনি আপনার বাসায় থাকা বয়স্ক মানুষ দের কাছ থেকে শুনে থাকবেন। তাছাড়া গরম জলে লেবুর খোয়া এবং এর সাথে দুই ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল দিয়েও স্টিম নিতে পারেন। এতে অনেকটা স্বস্তি আসবে।
  • নুন জলের গার্গলঃ ঠান্ডা লাগলে অথবা ফ্লু ভাইরাসের খপ্পরে করলে গলায় প্রচন্ড রকমের ব্যাথা অনুভব হয়। আর এই সমস্যার সমাধানের কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আমাদের কম বেশি সবার ধারণা রয়েছে তাও আমি একবার মনে করিয়ে দিচ্ছি এই উপায় হল গরম পানি নিয়ে গার্গল করা। গরম পানির সাথে লবণ পরিমাণমতো মিশিয়ে তিন থেকে চারবার গার্গল করতে পারলেই অনেকটা আরাম পেয়ে যাবেন এমনকি যারা টন্সিলাইটিসের সমস্যা তে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রেও এটি অনেকটা কার্যকরী প্রমাণিত হবে।
  • মধু ও তুলসীর মিশ্রণঃ ঠান্ডা লাগার কারণে দেখা যায় প্রায় থেকে থেকে কাশি উঠতে পারে যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য মোটেও স্বস্তির কোন বিষয় না। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য কাজে আসবে মধু ও তুলসীর মিশ্রণ এই মিশ্রণ তৈরির জন্য ৩ থেকে ৪টি তুলসী পাতা মধুতে ডুবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারেন তবে অনেকের পক্ষে এটি চিবিয়ে খাওয়া একটু কষ্টকর হয়ে যায় যারা চিবিয়ে খেতে পারেন না তারা চাইলে জল দিয়ে গিলে খেয়ে নিতে পারেন। এটি এতটাই কার্যকরী যে বুকে জমে থাকা কফও বেরিয়ে আসে।

  • ভেষজ চাঃ ঠান্ডা লাগার মত সমস্যা কে হারাতে চাইলে ভেষজ চা আপনাকে অনেক বেশি সাহায্য করতে পারে। দারচিনি, লবঙ্গ, আদা, মধু এবং তুলসী এ সকল কিছুর মিশ্রণে চা বানিয়ে ফেলুন এবং এরপর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গলায় চালান করে দিন তবে সাবধানে গলা পোড়ানো যাবে না। এসব ভেষজ ঔষধি গুণগুনে ভরপুর। এর সাথে এই উপাদান গুলোর ভিতরে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ। তাই দিনে দুই কাপ এই চা পান করলেই অল্পদিনেই ঠান্ডা লাগাকে গুডবাই জানিয়ে দিতে পারবেন।
  • নারিকেল তেলঃ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাল সংক্রমণ কে প্রতিরোধ করার জন্য সুপরিচিত নারিকেল তেল। গর্ভাবস্থায় নারিকেল তেল ব্যবহার করা তুলনামূলক নিরাপদ এবং এটি আপনি চাইলে সরাসরি ত্বকের উপর লাগাতে পারেন। সর্দি কিংবা ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি পেতে গরম পানিতে এক চামচ নারিকেল তেল মিশান। জ্বর,সর্দি, কাশি, ইফতারি সংক্রমণ করাতে পারে এমন ভাইরাসকে নারিকেল তেলে থাকা লোরিক অ্যাসিড মেরে ফেলে। আপনি চাইলে গরম জলের সঙ্গে এক চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে পান করতে পারেন অথবা নারিকেল তেলকে শরীরে মালিশ ও করতে পারেন।
  • মধু এবং পাতি লেবুঃ ঠান্ডা লাগার ফলে যখন কাশি হওয়া শুরু করে সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে পাতি লেবুর চায়ের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি গলার খুসখুসে ভাব এবং অস্বস্তি দূর করতে অনেক বেশি কার্যকরী এবং এর সাথে সাথে এটি গলা ব্যথা থেকেও আরাম প্রদান করবে। মধুর মধ্যে এন্টিভাইরাল এবং ইমিউন-বুষ্টিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাছাড়াও বিভিন্ন উপায়ে মধু পান করা যেতে পারে যেমন চায়ের সাথে কিংবা হালকা গরম জলের সাথে মধু গর্ভবতী মহিলার জন্য এবং গর্ভে তাকে ভ্রুন এর জন্য অনেক বেশি কার্যকরী উপাদান। পাতি লেবু এবং মধুর মিশ্রণটি খাওয়া খুব সহজ এটি নিরাপদ কফ সিরাপ হিসেবেও কাজ করবে। এক গ্লাস উষ্ণ জলের সাথে এক চা চামচ মধু এবং সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি দিনে কমপক্ষে চারবার পান করতে হবে তাহলে এটি বেশি কার্যকর হবে। পাতি লেবুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি রয়েছে এটি ঠান্ডা প্রতিরোধ করার পাশাপাশি কিডনিকে শরীর থেকে বর্জ্য ধুয়ে ফেলতেও সাহায্য করে।
  • হলুদঃ জ্বর ,সর্দি ,কাশি নিরাময় করতে বহু শতাব্দী থেকে ব্যবহার হয়ে আসা হলুদ এর কথা আমরা কি করে ভুলতে পারি। এটি একটি অন্যতম ভেষজ চিকিৎসা। হলুদের সাথে আদার সংমিশ্রণ আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে। গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যের উপকারিতার জন্য গরম দুধে হলুদ গুঁড়ো এ মিশিয়ে পান করতে পারেন। আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং লবণ মিশিয়ে এক গ্লাস হালকা গরম জলকে ভালো করে গুলে নিন। গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি পেতে দিনে দুইবার এই মিশ্রণটি গার্গল করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
  • অ্যাপেল সিডার ভিনিগারঃ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার দ্বারা শরীরে ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয় যার ফলে ঠান্ডা সংক্রমণ করা ভাইরাস গুলি বেঁচে থাকতে পারে না। ঠান্ডা লাগার প্রথম লক্ষণ দেখা দিলেই গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই অ্যাপেল সিডার ভিনিগার পান করা শুরু করে দেওয়া উচিত। চা কিংবা জলের সাথে দুই চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে সেটিকে দিনে দুই থেকে তিনবার পান করা যেতে পারে এটি শরীরের কোন ধরনের ক্ষতি করে না বরং এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে আপনি যদি এর থেকে সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে চান তাহলে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করে গার্গল করা সব থেকে ভালো উপায়। এটি যেহেতু খেতে একটু তেতো হয় অতএব গার্গল করার পরে এটি গিলে ফেলা একটু কষ্ট করে হতে পারে তবে এটি যে অত্যন্ত কার্যকর তা ভুললে চলবে না।
  • ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গুলো আমাদের শরীরকে শক্তিশালী করতে এবং সুস্থ রাখতে অনেক বেশি পরিমাণে সাহায্য করে থাকে। গর্ভাবস্থায় সাধারণত সুষুম খাদ্য খাওয়া উচিত। শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং অসুস্থতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে খাদ্যাভাসে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিভিন্ন রকমের টক জাতীয় ফল যেমন কমলা লেবু, কিউই, স্ট্রবেরি এবং আঙ্গুর এক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে‌। এছাড়া আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সবজি যেমন টমেটো, আলু, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি আহার করতে পারেন।
  • পেঁয়াজঃ গর্ভাবস্থায় তৃতীয় মাসে গিয়ে কাশি বা সর্দির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেঁয়াজ অত্যন্ত উপকারী। এমনকি যদি সাধারন ভাবে ঠান্ডা লেগে থাকে সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজ আপনাকে এর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।পিয়াজে রয়েছে কোয়ারসেটিন এবং সালফিউরিক যৌগ যা বিভিন্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া গুলোকে অক্ষম করে ফেলে।কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়াও অনেক বেশি সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও আপনি চাইলে একটি পেঁয়াজকে স্লাইস করে কেটে একটি পাত্রে রেখে তারপর এতে প্রায় দুই কাপ জল মেশিয়ে এই মিশ্রণটি নিয়মিত তিন থেকে চারবার খেয়ে দেখতে পারেন এতে আপনি অনেক বেশি উপকার পাবেন এবং ঠান্ডা লাগার মত সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এটি যথেষ্ট কার্যকর হবে।
  • আদাঃ আদা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আমাদের রান্নাঘরে স্থায়ী বাসিন্দা। আদতে এমন কিছু যৌগ রয়েছে যেমনঃ জিঞ্জেরল এবং স্কুল, যা আদাকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট করে তোলে। আর এ সকল কিছু সর্দি কাশি অর্থাৎ ঠান্ডা লাগা ঠেকাতে কতটা কার্যকরি আমরা পূর্বেই জেনেছি। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আদা কার্যকরী ভাবে সর্দি কাশি নিরাময় করতে পারে। এটি নিরাপদ ও বটে।
  • পর্যন্ত পরিমাণ জল পানঃ জ্বর,সর্দি, কাশির মতো সমস্যা আক্রান্ত শরীরে পানির ঘাটতে দেখা দিতে পারে। যা মোটেও সন্তোষজনক নয়। বরং গর্ভাবস্থায় এর ফলে নানা ধরনের সমস্যা সহ মা ও গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অন্তত এই সময়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ থেকে ৩.৫ লিটার পানি পান করতেই হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার পাশাপাশি আপনি চাইলে ডাবের জল ও নানা রকম ফলের জুস খেতে পারেন এতে উপকার পাবেন হাতেনাতে।

গর্ভাবস্থায় শুকনো কাশি হলে এবং বুকে কফ জমে থাকলে করণীয়

সাধারণ সময়ে শুকনো কাশি হয়ে থাকলে কিংবা বুকে কফ জমে থাকলে এক রকম অস্বস্তি ভাব এর সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর তা যদি গর্ভাবস্থায় হয় তাহলে বিষয়টি আরো সমস্যা সৃষ্টি করে। চুল জেনে নেওয়া যাক শুকনো কাশি কিংবা বুকে কফ জমে থাকলে করণীয় সম্পর্কে।
  • সর্বপ্রথম ঘরোয়া উপায়ে আপনাকে এর চিকিৎসা খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য আপনাকে বাসায় থাকা বিভিন্ন ওষুধি গুণাগুণ সম্পন্ন উপাদান ব্যবহার করতে হবে যেমন হলুদ, আদা, লবঙ্গ ,মধু, রসুন, পাতি লেবু ইত্যাদি।
  • প্রথমত ভেষজ চা এক্ষেত্রে অনেক উপকারী প্রমাণিত হতে পারে। লবঙ্গ, আদা, মধু, তুলসী ইত্যাদির মিশ্রণে বানানো চা বানিয়ে পান করা আপনাকে এই সমস্যা থেকে দ্রুত সমাধান দিতে পারে।
  • তুলসী পাতা সাধারণত কাশি নিরাময়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী। আপনি চাইলে তুলসী পাতা মধুতে ডুবিয়ে ডুবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন আর তা না হলেও তুলসী পাতা ভালো করে সিল পাটাই বেটে মধুর সাথে গরম করেও খেতে পারেন।

  • হলুদ জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি নিরাময়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। গরম দুধের সাথে হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করলে কাশির বিপরীতে এটি খুব কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আপনি চাইলে গার্গল করার জন্য আধা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং এগুলো হালকা গরম জলকে ভালো করে গুলিয়ে তা ব্যবহার করতে পারেন।
  • নারিকেল তেল দিয়ে শরীর মালিশ করা কিংবা গরম জলের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে পান করা কাশি নিরাময় এ অত্যন্ত কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত।
  • অনেক সময় এলার্জি থেকেও এই সমস্যা হয়ে থাকে সুতরাং যে সকল জিনিস থেকে এলার্জি আছে সেগুলো পরিহার করায় শ্রেয়।
  • রাতে ঘুমানোর সময় শুকনো কাশিটা একটু বেশি থাকে সেক্ষেত্রে মাথা নিচে দুটি বালিশ দিয়ে ঘুমালে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।

গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগা কী স্বাভাবিক?

গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন কিংবা ত্বকে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে ঠান্ডা অনুভূত হতে পারে। কিছু কিছু মহিলা গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভব করেন কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনার বা আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের কোনো রকম ক্ষতি হয়েছে কিংবা কোন ধরনের ভুল হচ্ছে। তবে ঠান্ডা অনুভূত হওয়া এবং ঠান্ডা লাগানো অর্থাৎ সর্দি-কাশি কিংবা জ্বর হওয়ার ভেতর পার্থক্য আছে তা অবশ্য আমাদের মাথায় রাখতে হবে এবং এরকম পরিস্থিতিতে পড়লে দ্রুত তা নিরাময় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কাশির সিরাপ খাওয়া যাবে কি?

যদিও গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের ঔষধ সেবন করতে বাধা নিষেধ করা হয় কিন্তু কিছু কিছু সিরাপ আছে যেগুলো নিরাপদ এবং গর্ভাবস্থায় প্রায়ই ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপঃ
  • গুয়াইফেনেসিন
  • সিউডোফেড্রিন
  • ক্লোরফেনিরামিন
  • ডেক্সট্রোমেথরফ্যান
  • ডিফেনহাইড্রামিন
যদি কাশি অতিরিক্ত থাকে তাহলে গর্ভবস্থায় এই সকল সিরাপ গুলো সেবন করা নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়।

আমাদের শেষ কথা

উপরিক্ত প্রবন্ধ সকল প্রতিকারগুলো দেওয়া আছে তা গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা লাগা নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী চিকিৎসা। তবে সকল উপায় গুলো বিভিন্ন নারী এর উপর আলাদা আলাদা মাত্রায় কার্যকর হতে পারে। তবে শারীরিক অবস্থা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী অনেকের ক্ষেত্রেই এটি সমানভাবে কার্যকর নাও হতে পারে। প্রতিকারগুলো যদি আপনার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপযোগী প্রমাণিত না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবিলম্বে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং উপরিক্ত প্রতিকারগুলোর ভিতরে কোন উপাদান কিংবা মিশ্রণ সেবনে ফলে পূর্বেও যদি আপনার কোন রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে তাহলে তা অবশ্যই প্রত্যাহার করা বাধ্যতামূলক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইজি গ্রাব ওয়েব এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url