আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকের আমাদের এই আর্টিকেল। আমলকি আমাদের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট কার্যকরী ফল হিসেবে বিবেচিত হয়। আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার সাথে আমরা এই তীব্র গরমে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেও জানব।


                                     
অনেক সময় পরিস্থিতি বিবেচনায় যেহেতু অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল অপরিমিত ভাবে গ্রহণের ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে সে সেই ক্ষেত্রে আমলকির উপকারিতা সহকারে অপকারিতা সম্পর্কেও আমাদের ধারনা থাকা উচিত।

ভূমিকা

আমলকি ভেষজ গুণসমৃদ্ধ একটি ফল যে ফলের ফল ও পাতা উভয়ই ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন। সংস্কৃত ভাষায় এই ফলের নাম "আমলক" এবং এর ইংরেজি নাম Amla। আমলকি গাছ প্রায় সারা দেশেই দেখা যায়। বাংলাদেশ,ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড প্রধানত এ কয়েকটি দেশে আমলকি চাষ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই এই ফলের চাষ হয়।
বাংলাদেশ ফল বাজারে সাধারণত আগস্ট মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই ফল পাওয়া যায়। চাষ ব্যতীত প্রাকৃতিকভাবেই অনেক স্থানে এই গাছগুলো জন্মাতে দেখা যায়। আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় বিষয়ই বিদ্যমান সুতরাং আমলকি ফল খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আমাদের এ বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত।

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আমলকি একটি ভেষজ ফল যা শরীর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার সাথে সাথে এর প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সমানভাবে সহযোগিতা করে থাকে চলুন জেনে নেওয়া যাক আমলকি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেঃ
  • ক্যান্সার প্রতিরোধঃ আমলকি ফলের মধ্যে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এর সাথে ক্যান্সার প্রতিরোধক বিভিন্ন ধরনের গুণ। আমলকি ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে শরীরকে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে দূরে রাখে। নিয়মিত এটি আপনার খাদ্যাভ্যাসে থাকলে আপনার দেহ ক্যান্সার এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকবে।
  • ওজন কমাতেঃ শরীরে বাড়তি ওজন ও মেদ সুস্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক নয়। অনেক সময় এটি অনেক রোগের ও কারণ হয়ে দাঁড়ায় সে ক্ষেত্রে আমলকি আপনাকে সহায়তা করতে পারে। এটি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়ার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি আপনার শরীরের বাড়তি ওজন কমাতেও করবে।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমরা কি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আমলকি গুঁড়ো ও মধুর মিশ্রণ নিয়মিত সেবন করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • আলসার প্রতিরোধেঃ প্রতিদিন সকালে আমলকি ফলের জুস খাওয়ার অভ্যাস করলে এটি আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী হিসেবে বিবেচিত হবে কারণ এর ফলে পেপটিক আলসারের মতো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
  • অগ্ন্যাশয় এর ক্ষত সারাতেঃ প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগে আক্রান্ত হলে আমাদের দেহের প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আর এই ক্ষত সারাতেই আমলকি ফল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ দেহের কোষগুলো যখন ইনসুলিন হরমোন উৎপাদন করতে কিংবা কমিয়ে দেয় তখন রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বেড়ে যায় এবং আমরা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। এক্ষেত্রে আমলকি ফলের রস আমাদের দেহের জন্য কার্যকর হতে পারে কারণ আমলকির রস রক্তের চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারে যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এছাড়াও আমলকির ফল, পাতা, ও ছাল থেকে তৈরি ওষুধ ডায়াবেটিস নিরাময় এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে আমলকিঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বককে আরো জেল্লাদার করে তুলতে আমলকি যথেষ্ট কার্যকরী। আমলকির রসের সাথে মধুর মিশ্রণ করে প্রতিদিন সকালবেলা সেবন করলে এটি আশানুরূপ ফল প্রদান করবে।
  • দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতেঃ আমলকির রসের সাথে মধুর মিশ্রণ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতেও যথেষ্ট উপকারী। এটা থাকা ভিটামিন 'এ' দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং এর পাশাপাশি এটি চোখে ছানি পড়া প্রতিরোধ করে এবং দৃষ্টি শক্তি বর্ধনের ফলে দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধা হয় না।
  • হৃৎপিণ্ডের ক্ষেত্রেঃ কোলেস্টেরল হৃদপিন্ডের জন্য কতটা ক্ষতিকারী তা কম বেশি আমরা সবাই জানি। এটি দেহে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমতে দেয় না এবং এর পাশাপাশি আমলকি ফলে থাকা ক্রোমিয়াম রক্তনালী এবং ধমনীর পর্দার চর্বি উৎপাদন এও বাঁধা প্রদান করে যার ফলে হৃৎপিণ্ড থাকে সুস্থ।
  • চুলের ক্ষেত্রেঃ চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য আমলকি অনেক উপকারী। আমলকির ব্যবহার চুলের শিকড় শক্ত করতে সহায়তা করে এর পাশাপাশি এটি নিয়মমাফিক ব্যবহারের ফলে চুল হয় ঘন এবং স্বাস্থ্যকর।
  • মেয়েদের ঋতুচক্রের জন্যঃ আমলকিতে কিছু ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যা ঋতুচক্রের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

আমলকির ঔষধি গুনাগুন

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা থাকার পাশাপাশি এর কিছু ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে নিম্নে তা নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
  • আমলকির দাঁত, চুল ও ত্বক ভালো রাখতে সহায়তা করে।
  • এটি চুলের খুশকি বা ছত্রাকজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
  • এটি হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের শক্তি বর্ধনেও যথেষ্ট কার্যকরী।
  • কোন কারনে বমি আসলে বা বমি ভাব হলে আমলকি খেতে পারেন এটি বমি ভাব দূর করতেও সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস রোগে এটি অত্যন্ত কার্যকরী এমনকি এই ফলের পাতা ও ছালাও ডায়াবেটিস রোগ নিরাময়ের ঔষধ তৈরীতেও ব্যবহার এ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
  • চুল পড়ে যাওয়া কমাতে এবং চুলের শিকড় শক্ত করার মাধ্যমে চুল এর সুস্থতা বজায় রাখতেও এটি অনেক উপযোগী।
  • খাওয়ার রুচি বর্ধন করতেও এটি অনেক উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
  • চোখ উঠা রোগ হলে চোখে আমলকি ফলের রস ব্যবহার করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও এটি অনেক উপকারী।
  • মাথাব্যাথার নিরাময়ক হিসেবে আমলকি কার্যকরী।
  • এটি দেহের রক্ত স্বল্পতা দূর করতেও যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
  • সর্দি,কাশি হতে আরোগ্য পাওয়ার জন্যও আমলকির নির্যাস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • আমলকি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও যথেষ্ট কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত।

গরমে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আস্তে আস্তে বাড়ছে গরম। আর এই গরমে আমলকি খাওয়ার কিছু উপকারিতাও রয়েছে।গরমে নিজের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য খাদ্যাভাসে আমলকি যুক্ত করা প্রয়োজন। আমলকি যেহেতু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল সুতরাং গরমকালে আমরা কি খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযোগী হতে পারে এর কারণ হলো গরমকালে শরীরে পানি শূন্যতা লক্ষ্য করা যায় আর এই ভিটামিন সি শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ এ সহায়তা করে থাকে। 

শুধু তাই নয় গরমকালে যেহেতু চর্মরোগ ও বৃদ্ধি পায় ব তাই এটি নিরাময়ের জন্যও ভিটামিন সি প্রয়োজন যা আবারো আমলকিতে পাওয়া যায়। আমরা পূর্বে জেনেছি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আমলকি যথেষ্ট কার্যকরী। অতিরিক্ত গরমে অনেক সময় দেখা যায় উচ্চ রক্তচাপ রোগে আক্রান্ত রোগীদের সমস্যা হয় তাই এই সময় আমলকি খাওয়া তাদের জন্য উপকারী প্রমাণিত হতে পারে। 

তীব্র গরমের মধ্যে শরীরকে ঠান্ডা রাখতেও আমলকি অনেক কার্যকরী এছাড়াও যাদের এলার্জি সমস্যা দেখা যায় তারা আমলকি খেতে পারেন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং হিট স্ট্রোক এর মত রোগ থেকেও আমলকি আমাদের বাঁচাতে পারে।

কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা আমলকি খাওয়ার বেশকিছু উপকারিতা বিদ্যমান রয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম পরিমাণ কাঁচা আমলকি কিংবা আমলকির রসের সাথে পাকা কলা ও সামান্য চিনি মিশিয়ে খেলে ডায়াবেটিস কিংবা বহুমূত্র রোগ কিছুটা হলেও নিরাময় করা সম্ভব। যারা অনিদ্রা রোগের শিকার তাদের ক্ষেত্রেও আমলকি যথেষ্ট কার্যকরী হতে পারে। ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আধঘন্টা আগে কাঁচা আমলকি কিংবা আমলকির রস পান করলে এই রোগ নিরাময় করা সম্ভব। 
২৫ গ্রাম আমলকির রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে মেয়েদের ঋতুস্রাব জনিত সমস্যা হালকা করতে সহায়তা করে। এবং এতে নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়। যে সকল মানুষদের ধাতুস্রাব রোগের সমস্যা রয়েছে তারা আমলকি খেতে পারেন। সাত থেকে দশ দিন কাঁচা আমলকি কিংবা আমলকির রস পান করলে কৃমির মতো সমস্যাও দূর করা সম্ভব।

আমলকি কিভাবে খাবেন ও কতটা খাবেন

বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই মূলত আমলকির চাষ হয় অতএব এটি একটি সহজলভ্য ফল বটে। কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশের ফলের বাজারে আমলকি আগস্ট হতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পাওয়া যায় অর্থাৎ এটি একটি শীতকালীন ফল তাই গরম কালে এটি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে তবে গরমকালে সাধারণত শুকনো আমলকি পাওয়া যায় এছাড়া কাঁচা আমলকি পাওয়া গেলে দিনে একটি খাওয়া যেতেই পারে।

সাধারণ সময়ে সারাদিন খালি পেটে এক থেকে দুইটা আমলকি খেলে হবে তবে নিয়মিত খাদ্যাভাসে এটি যুক্ত করা উচিত। এছাড়াও বাজারে প্যাকেটজাতকরণ আমলকির জুস পাওয়া যায় চাইলে আপনি তা পান করতে পারেন। এক থেকে দুটির অধিক আমলোকি খাওয়া খাওয়া উচিত নয় যেহেতু এতে ভিটামিন সি থাকে সেও তো অপরিমিত পরিমাণে এটি সেবন করলে স্বাস্থ্যের পক্ষে নেতিবাচক হতে পারে।

আমলকি খাওয়ার অপকারিতা

আমলকী একটি ভেষজ এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল হলেও অনেক ক্ষেত্রেইই এটি শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে আসুন জেনে নেই আমলকি খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কেঃ
  • আমলকির কারণে অনেক সময় অনেকের এলার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়
  • অপরিমিত পরিমাণে আমলকি খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব, পেটব্যথা, এমনকি ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
  • কোন ব্যক্তির যদি এসিডিটির সমস্যা থাকে তাহলে তার আমলকি খাওয়া উচিত নয়।
  • আমলকিতে যেহেতু ভিটামিন সি রয়েছে সেহেতু যারা সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়ে ভুক্তভোগী তাদের জন্য আমলকি খাওয়া মোটেও উচিত নয়।
  • যে সকল ব্যক্তিদের রক্ত জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের আমলকি না খাওয়াই ভালো।
  • যে সকল ব্যক্তিদের শরীরে অস্ত্রপাচার হয়েছে তাদের অস্ত্রপাচারের পরের কিছু মাস আমলকি থেকে বিরত থাকা ভালো কারণ সে সময় আমলকি খাওয়ার ফলে রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আমলকি ব্লাড সুগারের পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সহায়তা করে থাকে কিন্তু কারো যদি ব্লাড সুগার একদমই কম থাকে সেক্ষেত্রে তাদের আমলিক হওয়া উচিত নয়।

শেষ কথা

যেহেতু আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় জিনিস বিদ্যমান সুতরাং অবশ্যই আমলকি খাওয়ার পূর্বে আমাদের এর অপকারিতা এবং কোন কোন পরিস্থিতিতে শরীরের জন্য একটি নেতিবাচক হতে পারে তা খেয়াল রাখতে হবে। সচেতনতাই সুস্বাস্থ্যের মূল চাবিকাঠি। সুতরাং পরিমিত পরিবারে এই ভেষজ ফল খাদ্যভাসে যুক্ত করা উচিত না হলে এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইজি গ্রাব ওয়েব এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url